Monday 30 December 2019

আগামীকাল বই উৎসব সমগ্র দেশব্যাপী ২০২০ এর প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে যাচ্ছে ৩৫ কোটি বইঃ কুমিল্লার সময়


 

কুমিল্লার সময় ডেক্সঃ
 একদিন বাদেই দেশজুড়ে শুরু হবে বই উৎসব। বছরের প্রথম দিনটিতে উৎসবের অংশ হিসেবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেবে সরকার। এবার সারাদেশে ৪ কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার নতুন বই বিতরণ করা হবে।

এবারের বই উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে। এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেবেন তিনি। প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে সাভারের অধরচন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হবে উৎসব।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তক গত বছরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ থেকে বিতরণ শুরু হয়েছিল। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ের বই এবারেই প্রথম সাভার থেকে বিতরণ হবে। এছাড়াও দেশের প্রতিটি জেলায় আলাদা আলাদাভাবে বই উৎসবে অংশ নেবেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বনামধন্য ব্যক্তিরা।

২০২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৪ কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৮৬৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৪টি বই ছাপানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৩৭৫টি বই এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ২৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭৯টি বই বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে।

এ সব বই ছাপাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রাথমিকের জন্য ৩৫০ কোটি এবং মাধ্যমিকের জন্য ব্যয় হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা। ২০২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ৬৬ লাখ ৭৬ হাজার ১০০টি বই, প্রাথমিক স্তরের জন্য ৯ কোটি ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার ১৭২টি বই ছাপা হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাঁচটি ভাষার ৯৭ হাজার ৫৭২টি শিশুর জন্য প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ২ লাখ ৩০ হাজার ১৩০টি বই ছাপানো হয়েছে। দেশের ৭৫০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য ছাপা হয়েছে ৯ হাজার ৫০৪টি বই।

মাধ্যমিক স্তর ও মাদরাসার দাখিল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ছাপানো হয়েছে ২৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭৯টি বই। ইবতেদায়ি (মাদরাসার প্রাথমিক) স্তরের জন্য ছাপানো হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৫টি বই। এসএসসি ভোকেশনালের জন্য ১৬ লাখ ৩ হাজার ৪১১টি বই, এইচএসসি বিএম ভোকেশনালের জন্য ২৭ লাখ ৬ হাজার ২৮টি বই এবং দাখিল ভোকেশনালের জন্য ছাপানো হয়েছে এক লাখ ৬৭ হাজার ৯৬৫টি বই।

এনসিটিবির সহযোগিতায় টানা দশ বছর ধরে বিনামূল্যে পাঠ্যবই প্রদানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বই উৎসবের জন্য সারাবছর ধরে কাজ করতে হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই সারাদেশে বই পৌঁছে দিতে পেরে ভালো লাগছে। বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীরা বই হাতে পাবে এটি মূলত দেশের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এই উৎসব কখনো যেন বন্ধ না হয়।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘মন্ত্রণালয় সারাবছর ধরে শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেক ধরনের কাজ করে। তবে বই উৎসবের আয়োজন আমাদেরকে স্বস্তি দেয়। দেশের যারা ভবিষ্যৎ তাদেরকে বছরের প্রথম দিনেই আনন্দিত করতে পারাটা আমাদের জন্যও আনন্দের।’

উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে সরকার বছরের প্রথমদিন উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ করে আসছে। ২০১৯ সালে এ আয়োজনের এক দশক পূর্ণ হয়েছে। গত ১০ বছরে ২৯৬ কোটি ৭ লাখ ৮৯ হাজার ১৭২টি বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment