Monday 29 June 2020

বাখরাবাদ গ্যাস কুমিল্লার নতুন এমডি শঙ্কর মজুমদার : কুমিল্লার সময়




প্রদীপ মজুমদার : কুমিল্লার লালমাই উপজেলার কৃতি সন্তান শঙ্কর মজুমদার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এর আগে তিনি ঢাকায় পেট্রো বাংলায় কর্মরত ছিলেন। শঙ্কর মজুমদার কুমিল্লা জেলার সাবেক লাকসাম বর্তমান লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের লুধুয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা স্বর্গীয় চিত্তরঞ্জন মজুমদার পেশায় একজন স্বনামধন্য হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক ছিলেন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। শিক্ষা জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী লাকসামের এ মালেক ইনস্টিটিউশন রেলওয়ে হাই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সহিত এসএসসি ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে একাউন্টিং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। আমরা তার সফলতা কামনা করছি। 

Sunday 28 June 2020

নাঙ্গলকোটে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ : কুমিল্লার সময়




নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি  : কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় রাবেয়া আক্তার (২০) নামে এক তরুণীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রবিবার উপজেলার মান্দ্রা গ্রামের পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। রাবেয়া ওই গ্রামের আলী মিয়ার মেয়ে। নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন।

এ বিষয়ে নিহতের নানী জমিলা খাতুন (৭০) বলেন, রোববার সকালে তার মেয়ে জাহানারা বেগম মান্দ্রা বাজার যায়। এ সময় মোরটসাইকেলে করে তিনজন লোক তাদের বাড়িতে আসে। তিনি বলেন, আমি মনে করেছি তারা ব্যাংকের লোক।

নিহতের মা জাহানারা বেগম বলেন, রোববার সকাল ১১ টার দিকে আমি বাজার থেকে বাড়িতে আসি৷ মাকে জিজ্ঞাসা করি রাবেয়ার কথা। মা বলে, তিনজন লোক বাড়িতে আসছে তাদের সাথে কথা বলতেছে। তুমি ঘরে গিয়ে দেখো। সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘরে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের নিথর দেহ মাটিতে পড়ে আছে। তিনি আরও বলেন, তার মেয়ের সাথে একই গ্রামের আবুল কালাম ও তার ভাই লিটনের সাথে বিরোধ ছিল। তারা বিভিন্ন সময় তার মেয়েকে হত্যার হুমকিও দিয়েছে। যা নিয়ে এলাকায় সালিশ হয়। এ ঘটনা তারাও করতে পারে অভিযোগ করেন জাহানারা।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এক কিংবদন্তির জীবনাবসান ও মূল্যায়ন: কুমিল্লার সময়




প্রদীপ মজুমদার :
কুমিল্লা জেলার শিক্ষা প্রসারে যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের একজন দক্ষিণ কুমিল্লার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হরিশ্চর ইউনিয়ন হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক লক্ষ লক্ষ ছাত্র ছাত্রীর প্রিয় শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর শতবর্ষী আলহাজ্ব মকবুল আহমেদ বিএসসি বিটি আর নেই। তিনি গতকাল ২৭ জুন দুপুর ১টা ০৫ মিনিটে বার্ধক্য জনিত কারণে ওনার নিজ বাসভবন লাকসাম উপজেলার মজলিশপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছ ১০২ বছর।
আজ সকাল ১০টায় মরহুমের জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পাহাড়সম উচ্চতার মানুষটি ১৯২২ সালের ১লা মার্চ মজলিশপুরের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতা মোঃ হামীদ আলী ও মাতা মোসাঃ মোহর জাহানের চার সন্তানের জ্যেষ্ঠ সন্তান মকবুল আহমেদ।

তিনি ১৯৪২ সালে লাকসাম হাই স্কুল হতে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ হতে আইএসসি পরবর্তীতে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।

পড়ালেখা অবস্থায় পারবারিক প্রয়োজনে ১৯৪২ সালের ৭ই আগষ্ট খলিলপুর গ্রামের গুলবধন বেগমের সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

তিনি পাঁচ পুত্র ও ছয় কন্যা সন্তানের জনক।

এই গুণী শিক্ষক ১৯৫০ সালে হরিশ্চর ইউনিয়ন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে ১৯৮৭ সালে অত্র বিদ্যালয় হতে অবসর গ্রহণ করেন।
ওনার এই বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে বিদ্যালয়কে এনে দিয়েছেন অনেক সন্মান ও সুনাম যা ছড়িয়ে পড়েছিল সমগ্র দেশব্যাপী। ওই সময়টাকে বলাহয় হরিশ্চর স্কুলের স্বরনালী যুগ। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে মেধাতালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্হান সহ মেধাতালিকায় শীর্ষে অবস্থান ছিলো বিদ্যালয়টির। দক্ষ প্রশাসকও ছিলেন তিনি। যার সঠিক দিকনির্দেশনায় ভালো ফলাফলের পাশাপাশি ভালো মানুষ সৃষ্টির দৃষ্টান্ত ছিলেন তিনি।
ঐ সময়কার মেধাবী শিক্ষার্থীরা আজ দেশে ও বিদেশে দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।

হরিশ্চর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯২ সালের এসএসসি শিক্ষার্থীদের সংগঠন সম্পর্ক - ৯২ কতৃক এই শিক্ষানুরাগী গুণী শিক্ষক আলোকিত ব্যক্তি হিসেবে সংবর্ধিত করা হয়। ওই সময় তিনি বলেছিলেন আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার আজকের আয়োজন।
আমরা সকলেই স্যারের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করবো। পরপারে ভালো থাকবেন স্যার।

১ শ’ ৮৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষনা লাকসাম পৌরসভার : কুমিল্লার সময়



তমাল বণিক : 
কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার ২০২০-২১ অর্থ বছরের ১শত ৮৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষনা করা হয়েছে। রোববার দুপুরে পৌরসভার সভা কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের এ বাজেট ঘোষনা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরের মোট আয় ধরা হয়েছে ১ শত ৮৭ কোটি ৩০ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩১ টাকা। ব্যয় ধরা হয়েছে ১শত ৮৫ কোটি ৮৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩১ টাকা। রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ কোটি ৮২লাখ ১০ হাজার টাকা। বাজেটে উন্নয়ন আয় ধরা হয়েছে ১ শত ৬৩ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১শত ৬২ কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার টাকা। 

তিনি বলেন, এবারের বাজেটে করোনা ভাইরাস (কেভিট-১৯) দূর্যোগ প্রতিরোধ, অসহায় ও দুস্থদের সহায়তায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাইলট প্রকল্প হিসেবে লাকসাম পৌরসভায় দেশের একমাত্র স্মার্ট সিটি রূপান্তরের জন্য প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এতে প্রতিটি সেক্টরে মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাপক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। 

এ সময় সংবাদ সম্মেলনের বাজেট আলোচনায় অংশ নেন পৌর কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন (প্যানেল মেয়র-১), আবদুল আলিম দিদার, আফতাব উল্লাহ চৌধুরী ঝন্টু, শাহজাহান মজুমদার, গোলাম কিবরিয়া সুমন, মোহাম্মদ উল্লাহ, খলিলুর রহমান, নাসিমা আক্তার, সালমা আক্তার সুমি, মোসফিকা আলম মিতা, পৌর সচিব মোঃ আলা উদ্দিন, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আকতার হোসেন, প্রধান সহকারী আবুল খায়ের, ক্যাশিয়ার আবুল খায়ের প্রমুখ।

Saturday 27 June 2020

বাকই উত্তরে দূর্নীতি প্রতিরোধ ফোরামের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি : কুমিল্লার সময়



প্রদীপ মজুমদার :
জীবনের জন্য বৃক্ষ' বৃক্ষই জীবন কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের ৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ করেছে ইউনিয়ন দূর্নীতি প্রতিরোধ ফোরাম। 

গতকাল ২৭ মে শনিবার সকালে উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মোতাহার হোসেন ভূঁইয়া জুয়েল ও উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক আলমগীর হোসেন অপু নির্দেশনায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়।
 
প্রদীপ মজুমদার এর সঞ্চালনায় ভাবকপাড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বাকই উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক আইউব আলী। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ১০টি করে ফলজ,বনজ,ঔষধি বৃক্ষ রোপণ করা হয়। 


এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য আবদুল বারী, দূর্নীতি প্রতিরোধ ফোরাম বাকই উত্তর ইউনিয়নের আহবায়ক মাষ্টার আজিজুল হক মোল্লা, আ,লীগের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ন আহবায়ক মাষ্টার এ কে আজাদ, যুগ্ন আহবায়ক মাষ্টার দীপঙ্কর সিংহ,সদস্য সচিব আর্মি আবুল কালাম, মোহনপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ হায়াতুজ্জামান, ভাবকপাড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্ধার্থ সিংহ, নুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাস সিনহা, হাতিলোটা মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুর সাত্তার, ইউনিয়ন প্রতিরোধ ফোরামের সদস্য ডা.বিল্লাল, সদস্য মোঃ বিল্লাল, সদস্য আবুল হাশেম, রাসেল প্রমুখ। 

Tuesday 23 June 2020

লালমাই এর মোহনপুরে আওয়ামীলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল : কুমিল্লার সময়





প্রদীপ মজুমদার :
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ জুন) বিকাল ৪ টায় ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জাবের হোসেন জাবেদের সার্বিক সহযোগিতায় মোহনপুর আলিম মাদ্রাসায় এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কাশেম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আবদুল বারীক, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ খোরশেদ আলম, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ হায়াতুজ্জামান, শিক্ষক আবদুল মালেক দলের বিভিন্ন ইউনিটের ওয়ার্ড ও গ্রাম কমিটির নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।




মিলাদ মাহফিলের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তারা বলেন, সংকটে, সংগ্রামে ও অর্জনে গণমানুষের পাশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১ বছর।
যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জাবের হোসেন জাবেদ বলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর জন্য সকলকে দোয়া করতে বলেন। পাশাপাশি সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অর্থমন্ত্রীর বড় ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল হামিদ ও ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়াতুল্লাহ, যুবলীগ নেতা কাজী কামরুল হাসান ভুট্টো সহ উপজেলার সকল মানুষের রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা হয়।


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম শুরু করে আওয়ামী লীগ।

৭১ বছর পরেও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণমানুষের শান্তি-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।

তাই দেশ ও সমাজের উন্নয়নে আওয়ামীলীগের প্রতিটি কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে।

Monday 22 June 2020

প্রধানমন্ত্রীর ও অর্থমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য কামনায় শাফা খতম দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত : কুমিল্লার সময়




প্রদীপ মজুমদার :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সহ লালমাই উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা, সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম ভেলুর উদ্যোগে আজ ২২ জুন সকালে পেরুল মধ্যম পাড়া বাইতুল নূর জামে মসজিদে শাফা খতম মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিলাদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন রায়দুয়ারের হুজুর মোহাম্মদ আলী।
মোনাজাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং পনেরো আগস্ট শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা, বিভিন্নমুখী ষড়যন্ত্র থেকে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর হেফাজত কামনা করা হয়। দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস হতে রক্ষায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।


কুমিল্লা - ১০ নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রিয় মানুষ সারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপির পরিবারের মন্ত্রীর বড় ভাই লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হামিদ, ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার,ভাতিজা কুমিল্লা দক্ষিন জেলা যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান শাহীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়াতুল্লাহ, যুবলীগ নেতা কাজী কামরুল হাসান ভুট্টো করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি কামনায় দোয়া প্রার্থনা করা হয়।

এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মালেক,ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুমদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আক্তার হোসেন পারভেজ সহ সকলের দীর্ঘায়ু ও সু্-স্বাস্থ্য কামনা এবং লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অসুস্থ্য নেতাকর্মীদের সুস্বাস্থ্য কামনা করা হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আলহাজ্ব ফজলুল হক ডিলার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মালেক, প্রগতি সংঘ লালমাই এর প্রতিষ্ঠাতা সমাজকর্মী শরীফুল ইসলাম প্রমুখ ।

Friday 19 June 2020

লালমাইয়ে চলাচলের অযোগ্য মেহেরকুল দৌলতপুর সড়ক : কুমিল্লার সময়





প্রদীপ মজুমদার : কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা হতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদারের নামে মেহেরকুল দৌলতপুর সড়কটি কয়েক বছর ধরে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করার ফলে খানাখন্দে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। আর ড্রেনের পানি তো রয়েছেই। স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন জায়গায় বালু, ইটের গুঁড়া ফেললেও কর্তৃপক্ষের নেই কোনো মাথাব্যথা। স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানকে কয়েক দফা বলার পরেও কোনো কাজে আসেনি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।


অটোরিকশা চালক মো. দিপু বলেন, এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে আমাদের ও গাড়ির অনেক সমস্যা হয়। রাস্তা ভাঙা থাকার কারণে গাড়ির সকেট জাম্পার, নষ্ট হয়ে যায় কয়দিন পরপরই। অটোরিকশা থেকে যা আয় হয় তা গাড়ি সারাতেই চলে যায়। নিজেরা ইটের গুঁড়া ফেলে একটু মেরামত করেছিলাম, তাতেও কাজ হয়নি। বর্ষা থাকুক আর না থাকুক রাস্তায় পানি থাকেই।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়কামতার ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম বলেন হাজারো স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী ও মানুষের পদচারণা এই সড়কে শীতকালেও এ রোডে পানি থাকে। দীর্ঘ সাত আট বছর ধরেই এ রাস্তাটা ভাঙাচোরা আমি এই এলাকার সাংসদ মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপির সাথেও কথা বলেছি তিনি বলেছিলেন রাস্তাটি সংস্কার হয়ে যাবে। দুঃখের বিষয় আজও সংস্কার হয়নি। তিনি আবারও অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন এই এলাকার প্রিয় মানুষ সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার এর নামে সড়কটি সংস্কার করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করার কথা বলেন।

চলাচলে অসুবিধা হয় মেহেরকুল দৌলতপুর, জয়কামতা,পূর্ব ও পশ্চিম নোঁয়াগাও, পরানপুর,ধনপুর,রাইপুর, মান্দারী,মেরকোট, সৈয়দপুর এলাকার মানুষের।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মেহেরকুল দৌলতপুর অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার সড়কের সৈয়দপুর,জয়কামতা,দৌলতপুরের বিভিন্ন অংশে রোডের প্রায় সম্পূর্ণটাই খানাখন্দে ভরা আর ভাঙ্গাচোরা। কিছু জায়গায় পানি উঠে কাদা জমে ডোবার মতো হয়ে আছে। পথচারীরা কাদা মাড়িয়ে হেঁটে রাস্তাটি পার হন। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে রিকশা, সিএনজি ও অটোরিকশা।গত কয়েকবছর ধরে এমন কাদাপানি হয়ে থাকে যে হেঁটেও পার হওয়া যায় না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই রাস্তার এমন অবস্থা বলে জানান স্হানীয় লোকজন।

লালমাই উপজেলা প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী জানান সড়কটি সংস্কারের প্রক্রিয়া চলছে। সহসাই সংস্কার কাজ আরম্ভ হবে।

Thursday 18 June 2020

লালমাইয়ে উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ ফোরামের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি: কুমিল্লার সময়


 
প্রদীপ মজুমদার :   
দূনীতিকে না বলি উন্নত সমৃদ্ধ লালমাই উপজেলা গড়ি'জীবনের জন্য বৃক্ষ' শ্লোগান নিয়ে লালমাই উপজেলার ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ করেছে উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ ফোরাম। 


সংগঠনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বাগমারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয়, বাগমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার মহিলা কলেজ সহ মোট ১৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঔষধি, ফলদ ও বনজ জাতের গাছ লাগানো হয়।

বাগমারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ মোতাহার হোসেন ভূঁইয়া জুয়েল ও উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক আলমগীর হোসেন অপু। এসময় দুনীতি ফোরামের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

লালমাইয়ে ভুয়া ল্যাঃ জেনারেল গ্রেফতার : কুমিল্লার সময়




প্রদীপ মজুমদার :
সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নামে ভুয়া ল্যাঃ জেনারেল প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে লালমাই থানা পুলিশ । বুধবার সন্ধ্যায় লালমাই থানাধীন দত্তপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ভুয়া ল্যাঃ জেনারেলের নাম সাগর বোগদাদি (৬৫)
লালমাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আইউব জানান, ঘটনাস্থল থেকে ১ জনকে গ্রেফতার করা হলেও পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় তাকে বহনকারী মাইক্রোবাস। আটক ব্যক্তি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের প্রধান বলে জানা যায় ।
তারা সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার ভুয়া পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকার লোকজনের কাছ থেকে সেনাবাহিনী এবং নৌ বাহিনীতে চাকরি দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত। বিভিন্ন মানুষের কাছে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত ল্যাঃ জেনারেল র‌্যাঙ্ক ব্যাজ সম্বলিত ছবি দেখিয়ে নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত ল্যাঃ জেনারেল হিসাবে উপস্থাপন করতেন। আটককৃত ব্যক্তি উপজেলার দত্তপুর গ্রামের হুমায়ুন কবির সহ ৪ জন থেকে চার লক্ষ দশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই দিন ভুয়া নিয়োগপত্র নিয়ে দত্তপুর আসলে প্রতিশ্রুত পদের সাথে আইডি কার্ডের গরমিল হলে লোকজন পুলিশে খবর দেয়। আটককৃত প্রতারকের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা চলমান রয়েছে।
এঘটনায় প্রতারণার স্বীকার হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে লালমাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং - ১৮.০৬.২০২০ ধারা - ১৭০/১৭১/৪২০/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান এএসপি সার্কেল প্রশান্ত পাল ও অফিসার ইনচার্জ মোঃ আইউব ।

Wednesday 17 June 2020

লালমাইয়ে শ্বশুর বাড়িতে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ: কুমিল্লার সময়





লালমাই প্রতিনিধি :
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের দোশারীচোঁ গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী শাহীনুর আক্তার (২২) শ্বশুর বাড়িতে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৬ জুন) দুপুরের দিকে পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের দোশারীচোঁ গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার নোয়াবাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছয় দুই বছর পূর্বে দোশারীচোঁ গ্রামের তৈয়ব আলী এর পুত্র ওমান প্রবাসী কাজী জাফরের সঙ্গে বিয়ে হয় শাহীনুরের। নিহত শাহীনুর পাশ্ববর্তী লাকসাম উপজেলার কোয়ার গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। কাজী জাফর ও শাহীনুর দম্পতির নুর মোহাম্মদ নামের চার বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য বারবার গৃহবধূ শাহীনুরকে নির্যাতন করে আসছে। এক পর্যায়ে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম মিলন জানায়, গতকাল দুপুরবেলা তৈয়ব আলী ও তার স্ত্রী পেয়ারা বেগম নিহত শাহীনুরের সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে মারধর করে আমি গিয়ে তাদের মিলমিশ করে দেই। আমি চলে আসার পর পুনরায় আবার তারা শাহীনুরকে মারধর করে। শ্বশুর তৈয়ব আলী শাহীনুরের তলপেটে লাথি মারে এতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমি ধারণা করছি। তৈয়ব আলী পূর্বে ও এভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তবে তিনি জানান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার লাশ উদ্ধার করে লালমাই থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।

বিয়ের পর থেকে এ ৬ বছরের মধ্যে পুত্রবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় অনেকবার পারিবারিক ভাবে শালিস বৈঠক হয়েছিল বলে সূত্রে জানা গেছে।

নিহতের মামা অলিউল্লাহ জনান, তারা শাহীনুরকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, শিশুকাল থেকেই শাহীনুর নানার বাড়িতে থাকতো, এখানেই বেড়ে উঠেছে সে। শাহীনুরকে নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে তার চার বছরের শিশুকে যারা এতিম করে দিয়েছে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেসব হত্যাকারীদের বিচার চাই।

এব্যাপারে নিহত শাহীনুরের মা সেতারা বেগম বাদী হয়ে লালমাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

লালমাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আইউব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

ইউএনওর হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো বাল্যবিবাহ : কুমিল্লার সময়





প্রদীপ মজুমদার :    
কুমিল্লার লালমাই উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। গতকাল বুধবার  উপজেলার বাগমারা উত্তর  ইউনিয়নের মেহেরকুল দৌলতপুর গ্রামে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার  (ইউএনও) কে এম ইয়াসির আরাফাত ।
ইউএনও বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। 

এ খবর জানতে পেরে  তাৎক্ষণিক উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে ঘটনাস্থলে পাঠান এবং স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবদুল ওহাব সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিয়ে বাড়িতে মেয়ের মা বাবাকে বাল্যবিবাহের কুফল ও অাইনি নিষেধাজ্ঞার কথা বুঝিয়ে বলে বিয়ের বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন। সাদিয়া আক্তারের পিতা আব্দুল খলিল মেয়ে সাদিয়া আক্তারের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেন না বলে মুচলেকা প্রদান করেন।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার. মো রফিকুল ইসলাম বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশনা পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করেছি।
ইউএনও লালমাই বলেন,বাল্যবিবাহে শিশু, পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।সাদিয়ার মতো শিশুদের করুণ পরিণতি হতে রক্ষা করা দায়িত্ব বলেই এই বিয়ে বন্ধ করেছি। জনস্বার্থে এধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।

Tuesday 16 June 2020

সুখবর, করোনায় জীবন রক্ষাকারী প্রথম ওষুধ আবিষ্কার : কুমিল্লার সময়





কুমিল্লার সময় ডেক্স:    
সস্তা ও ব্যাপকভাবে সহজলভ্য ওষুধ ডেক্সামেথাসোন (Dexamethasone) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের জীবন বাঁচাতে পারে বলে যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন। যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কম ডোজের স্টেরয়েড ট্রিটমেন্ট যুগান্তকারী সাফল্য।

এই ডেক্সামেথাসন ওষুধটি ভেন্টিলেটর সাপোর্টে এ থাকা রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে দেয় এবং অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি এক-পঞ্চমাংশ কমিয়ে দেয়। ওষুধটি শুধু মাত্র হাসপাতালে থাকা গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা যাবে।


শরীরের এই ওষুধের ওভার-রিঅ্যাকশন মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
তাই কোনোভাবে এই ওষুধটি বাড়িতে নেওয়া যাবে না এবং নিজে নিজে ওষুধটি গ্রহণ করা যাবে না বলে সর্তক করেছেন গবেষকরা।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ডেক্সামেথাসোনকে(Dexamethasone) করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রথম জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।


বিশেষজ্ঞদের উদ্বৃতি দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জন করোনারোগীর মধ্যে ১৯ জনই কোনো হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাড়া সুস্থ হচ্ছেন। যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাদেরও অধিকাংশ সুস্থ হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের রোগীদের মধ্যে কারো কারো অক্সিজেন এবং মেকানিক্যাল সাপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে। এই উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের সুস্থ হতে ডেক্সামেথাসোন (Dexamethasone) সহায়তা করে।
ওষুধটি ইতোমধ্যে অন্যান্য অবস্থায় বিভিন্ন পরিসরে ইনফ্ল্যামেশন কমাতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ডেক্সামেথাসোন ওষুধটি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থার মধ্যে কিছু ক্ষতি (damage) থামাতে সহায়তা করে। শরীরে ডেক্সামেথাসোনের অতি-প্রতিক্রিয়া বা ওভার-রিঅ্যাকশনকে সাইটোকাইন ঝড় (cytokine storm )বলে এবং এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দলের নেতৃত্বে ওষুধটি পরীক্ষা বা ট্রায়ালের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালের প্রায় দুই হাজার রোগীকে ডেক্সামেথেসোন দেওয়া হয়েছিল এবং তুলনা করার জন্য চার হাজার রোগীর ক্ষেত্রে এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়নি।
ট্রায়ালে দেখা যায় ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে এই ওষুধটি ৪০ থেকে ২০ শতাংশ মৃত্যুরঝুঁকি কমায় এবং যেসব রোগীদের অক্সিজেন নেওয়া প্রয়োজন হচ্ছিলো তাদের ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ২০ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি কমায়। প্রধান তদন্তকারী অধ্যাপক পিটার হরবাই (Prof Peter Horby) বলেন, এটিই একমাত্র ওষুধ যেটি মৃত্যুহার কমিয়েছে দেখা গেছে এবং এটি কমিয়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। এটি অনেক বড় যুগান্তকারী সাফল্য।

বিদ্যমান চিকিৎসার মধ্যে করোনা ভাইরাসের জন্যও কাজ করে কিনা তা দেখতে বিশ্বের বৃহত্তম ট্রায়াল টেস্টিং এর অংশ এই ওষুধ। গবেষকরা অনুমান করছেন করোনা ভাইরাস মহামারির শুরু থেকে ওষুধটি যুক্তরাজ্যে সহজলভ্য থাকতে তবে এর মাধ্যমে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো। কারণ এটি সস্তা। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলো এই ওষুধ হতে ব্যাপক সুবিধা পেতে পারেন।

প্রধান গবেষক অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ড্রেই (Prof Martin Landray) বলেন, অনুসন্ধান বলছে ভেন্টিলেটরে থাকা প্রতি আটজন রোগীর মধ্যে এই ওষুধের মাধ্যমে একজনকে বাঁচানো যেতে পারে। আর যারা অক্সিজেন নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে প্রতি ২০ থেকে ২৫ জনের মধ্যে একজনের জীবন বাঁচানো যেতে পারে এই ওষুধের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার, পরিষ্কার সুবিধা। একজন রোগীর চিকিৎসায় ১০ দিনে ডেক্সামেথাসোনে খরচ পড়বে ৩৫ ইউরো (৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা) মানে ৩৫ ইউরোতে একটি জীবন বাঁচানো সম্ভব। এই ওষুধটি সারা বিশ্বে সহজলভ্য। অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ড্রেই বলেন, যখন প্রযোজ্য হবে দেরি না করে হাসপাতালের রোগীদের ওষুধটি দেওয়া উচিত। কিন্তু কোনোভাবেই চিকিৎসক ছাড়া সাধারণ মানুষের এটি কিনে বাড়িতে নেওয়া বা নিজে নিজে এই ওষুধ নেওয়া কোনোভাবে ঠিক হবে না। করোনা ভাইরাসে মৃদু লক্ষণে এই ডেক্সামেথাসোন মানুষকে কোনো সাহায্য করতে পারে না।

করোনা ভাইরাসে রিকভারি ট্রায়াল মার্চ মাস থেকে চলছে। এর মধ্যে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনাইন রয়েছে যেটি পরবর্তীতে মৃত্যু বৃদ্ধি এবং হার্টে সমস্যা তৈরির জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করে। অন্য একটি ওষুধ রেমডিসিভির একটি অ্যান্টিভাইরাল ট্রিটমেন্ট হিসেবে এর ক্ষেত্রে দেখা গেছে ওষুধটি করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার সময় কমিয়ে আনে। ওষুধটি তৈরি করে সহজলভ্য করা হচ্ছে। রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস এবং অ্যাজমার মতো বিভিন্ন রোগে গুরুতর অবস্থায় ডেক্সামেথাসোন ১৯৬০ সালের শুরু থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করোনায় আক্রান্ত : কুমিল্লার সময়

 



কুমিল্লা প্রতিনিধি : 
অর্থমন্ত্রীর বড় ভাই।
কুমিল্লার লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হামিদ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ১৫ জুন রাতে তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তিনি কুমিল্লা শহরের ঝাউতলাস্থ বাড়ীতে পারিবারিক আইসোলেশনে রয়েছেন। জ্বর ছাড়া তার শরীরে অন্য কোন উপসর্গ নেই। তার পরিবারের অন্যদেরও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রবীন এই নেতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন অর্থমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম সিংহ রতন ও লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক কাজী মেহেদী হাসান বাপ্পী।

লালমাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: জয়াশীষ রায় বলেন, ১৬ জুন পর্যন্ত এই উপজেলায় মোট ৩৪১ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এদের মধ্যে রিপোর্ট এসেছে ২৮৮ জনের। করোনা সনাক্ত হয়েছে ১৭জনের। করোনায় মারা গেছেন ২জন। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২জন।

উল্লেখ্য করোনাকালে অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এমপির পক্ষে তাঁর বড় ভাই আবদুল হামিদ লালমাই উপজেলার হতদরিদ্রদের ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। করোনা ঝুঁকি নিয়েই তিনি হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

লালমাইয়ে স্বাস্থ্য বিধি না মানায় ৮ জনকে অর্থদন্ড : কুমিল্লার সময়





প্রদীপ মজুমদার : 
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার স্বাস্থ্য বিধি না মানায় ৮ জনকে অর্থদন্ড দিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চালানো অভিযানে অর্থ দণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম ইয়াসির আরাফাত । তিনি পথচারী এবং বাজারে আসা লোকজনকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে সতর্ক করেন।

এসময় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ও মাস্ক পরিধান না করায় ৮ জনকে সংক্রামক রোগ( প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) অাইন,২০১৮ এ মোট ৮৬০০ টাকা অর্থদণ্ড ও সতর্ক করেন। দন্ডিত ব্যক্তিদের ও বয়োবৃদ্ধ গরীব লোকদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন।
মাস্ক খুলে প্রকাশ্যে ধুমপান করায় দুইজনকে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।

কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে লালমাই উপজেলা প্রশাসন  কর্তৃক বাগমারা জিরো পয়েন্ট, বাগমারা বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আইন অমান্য করায় ৮ জনকে অর্থ দন্ড প্রদান করা হয়।পরে গরীব ও অসচ্ছল ব্যক্তিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক প্রদান করা হয়। 

Sunday 14 June 2020

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মানুষকে রক্ষা করতেই এবারের বাজেট: অর্থমন্ত্রী : কুমিল্লার সময়





নিজস্ব প্রতিনিধি :
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এবার যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে সেটাতে মূলত মানুষকে রক্ষা করাটাকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। টাকা কোথা থেকে আসবে সেটা পরে দেখা যাবে। আগে আমরা খরচ করতে চাই। পরে আয় করবো।

গত শুক্রবার (১২ জুন) নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেট-উত্তর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এবারের বাজেট দেয়া হয়েছে মানুষকে রক্ষার জন্য। মানুষকে খাবার দিতে হবে। চাকরি হারাদের চাকরি দিতে হবে, চিকিৎসা দিতে হবে। এবারের বাজেটে আমরা এসব গুরুত্ব দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ টাকা কোথা থেকে আসছে সেটা পরে দেখা যাবে। আগে খরচ করবো। তারপর আমরা টাকার কথা চিন্তা করবো।

এদিকে শুক্রবার (১২ জুন) সকালে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, এবার গতানুগতিক একটা বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট নজিরবিহীন স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, মানবিক ও সামাজিক সংকট মোকাবিলায় বাজেটে যে ধরনের সৃজনশীলতার দরকার ছিল তা দেখা যায়নি। এছাড়া ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ অর্থ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তাতে বেসরকারি বিনিয়োগ সংকটের মুখে পড়বে।

নতুন অর্থবছরে (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর শুক্রবার এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ অভিমত দেয় বেসরকরি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। ব্রিফিংয়ে সিপিডির মূল পর্যালোচনা তুলে ধরেন নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গতানুগতিকতার বাইরে যাওয়ার যে প্রয়োজনীয়তা এ বাজেটে ছিল, সেটা আমরা দেখছি না। আমরা দেখছি হিসাব মেলানোর জন্য এনবিআর এবং রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে যারা আছেন তাদের অবাস্তব একটা টার্গেটের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে বাজেটের কাঠামো একটা দুর্বল কাঠামোর দিকে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

লালমাইয়ে আরও দু’জন করোনা আক্রান্ত : কুমিল্লার সময়



 

প্রদীপ মজুমদার : কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় আরও দুইজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রবিবার নতুন দু’জনের আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও কে এম ইয়াসির আরাফাত ও উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়াশীষ রায় । আক্রান্তরা হলেন উপজেলার বাগমারা উত্তরের দত্তপুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক ও বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী রাধাকৃষ্ণ বণিক। তাদের দু'জনের বাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লকডাউন করা হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ১৬ জন। এরমধ্যে ০২ জনের মৃত্যু হয়েছে ও সুস্থ হয়েছেন ৩ জন। 

ইউএনও কে এম ইয়াসির আরাফাত বলেন , আক্রান্তদের হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তাদের সংস্পর্শে আসা পরিবারের সদস্যরা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

তিনি জানান, উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ চলমান রয়েছে। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দিন দিন যেভাবে করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে লালমাই উপজেলা সংকটময় হতে পারে। তাই সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি। 

লালমাই উপজেলায় সংগৃহীত মোট ৩১৬ টি নমুনার মধ্যে ২৭২ টি নমুনার ফলাফল পাওয়া গেছে। 

বুঝাইলে বুঝে” মোহাম্মদ আইয়ুব : কুমিল্লার সময়




১১ই জুন‍’ ২০২০ বিকাল ৫ টা। একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলাম। একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে বার বার কল আসছিলো। রিসিভ করার সুযোগ ছিল না। কয়েকবার আমি মিটিং-এ আছি ম্যাসেজ সেন্ড করলাম। কোন লাভ হলো না। আবার কল। রিসিভ করে সালাম দিয়ে বললাম, ”আমি মিটিং এ আছি”। বেশি জরুরি না হলে আধা ঘন্টা পরে কল দেন। আচ্ছা, ঠিক আছে- বলে ফোন কেটে দেন। আমিও স্বস্তি পেলাম। হয়ত তেমন জরুরি কিছু না।

আধাঘন্টা পর কনফারেন্স শেষ হলো। আমি ঐ নাম্বারে কল ব্যাক করলাম। রিসিভ করেই সালাম দিয়ে তাঁর পরিচয় দিলেন। তিনি ইউনিয়ন পর্যায়ের একজন সম্মানিত জনপ্রতিনিধি।

কুশল বিনিময়ের পর যা বললেন, তাতে কিছুটা অস্বস্তিবোধ করলাম। যা শুনবার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। যদিও অনুরুপ ঘটনা দেশের কোথাও যে ঘটেছে না, এমন নয়।

তিনি বললেন, তাঁর এলাকার একজন লোক চট্টগ্রামে চাকরি করতেন। কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ বিকালে মারা গেছেন। তার আত্মীয় স্বজনদের বলেছিলেন, চট্টগ্রামে দাফন করে ফেলতে। কিন্তু তারা শুনলো না। লাশ নিয়ে রওনা করেছে। কবরস্থানে কবর খুড়ছে। অন্যদিকে আতঙ্কিত লোকজন জড়ো হচ্ছে। লাশ নিয়ে এলাকায় ঢুকতে দেবে না। লাশ দাফনে বাধা দিবে। দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হতে পারে। আপনি কিছু পুলিশ পাঠান।
 
আমি তাকে বললাম,- এই লোক যে করোনা আক্রান্ত ছিলেন, এটা কি শিউর ? 
-হ্যাঁ, শিউর।
কিভাবে শিউর হলেন ? পরীক্ষার রিপোর্ট কী দেখেছেন ?
-না। শুনেছি। 
তার মানে নিশ্চিত নন । আমিও চট্টগ্রাম থেকে সরকারিভাবে কোন করোনা রোগীর লাশ প্রেরণের বার্তা বা ই-মেইল পাইনি। সুতরাং আমি তাকে করোনা আক্রান্ত ছিল বলতে পারি না। 
    
      আমি পুলিশ পাঠাবো না । কিছু কথা বলছি, মনোযোগ সহকারে শুনুন। তারপর লাশ দাফনে যারা বাধা দিতে জড়ো হচ্ছে, তাদের বুঝাবেন। আশা করি তারা বুঝবেন। 
      বিশ্ব স্বাস্থ্য  সংস্থা ও  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেল্থ বুলেটিন থেকে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি করোনা কিভাবে ছড়ায়-
• আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি ও কাশি থেকে। 
• আক্রান্ত ব্যক্তির কথা বলা থেকে।
• আক্রান্ত ব্যক্তি যেখানে সেখানে থুতু ফেললে।
• আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে হ্যান্ডশেক করলে।
• আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে কোলাকুলি করলে।
• আক্রান্ত ব্যক্তি লোকালয়ে ঘোরাঘুরি করলে। 
ঠিক কি না ?
-ঠিক। 
এবার আমাকে বলুন-
ঐ লাশ কি কথা বলে ?
-না। 
হাঁচি দেয়?
-না।
কাশি দেয় ?
-না। 
হ্যান্ডশেক করে ?
-না। 
কোলাকুলি করে ?
-না। 
যেখানে সেখানে থুতু ফেলে ?
-না। 
লোকালয়ে ঘোরাঘুরি করে ?
-না। 
     তাহলে তার কাছ থেকে করোনা ছড়াবে কি করে ?
করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির চেয়ে করোনা আক্রান্ত জীবিত ব্যক্তি হাজার গুন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আমার জানা মতে, এই পর্যন্ত একটিও প্রমানিত ঘটনা নেই যে, করোনায় মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি গুলো মেনে মৃতের গোসল দিলে, জানাযা পড়লে, সৎকার করলে করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নিজ নিজ ধর্মীয় রীতি অনুসারে সঠিক সৎকার পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। এই অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না।  
      একটু ভেবে দেখুন। একজন মানুষের অন্তিম বিদায়ে, শেষ যাত্রায় ও দাফনে বাধা। কতই না মর্মস্পর্শী, হৃদয় বিদারক ও মর্মান্তিক ! 
    
      ঐ লোকটির বাড়ি আপনার এলাকায়। চাকরি করতেন চট্টগ্রামে, তাইতো ? 
-হ্যাঁ। 
    
আচ্ছা, আমার বাড়ি তো কক্সবাজার, চাকরি করি আপনাদের এলাকায়। প্রতিদিন আপনাদের এলাকায় করোনা আক্রান্ত কোন না কোন রোগীর বাড়িতে যাচ্ছি। করোনায় মৃত্যু বরণ করা ব্যক্তির জানাযায় যাচ্ছি। লাশ দাফনে যাচ্ছি। করোনা রোগীর স্যাম্পল কালেকশনে স্বাস্থ্য কর্মীকে সহায়তা করতে যাচ্ছি। করোনা রোগীকে আইসোলেশনে থাকা নিশ্চিত করতে যাচ্ছি। করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন করতে যাচ্ছি। আবার কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের ফোন পাওয়া মাত্রই সরকারী খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে যাচ্ছি। করোনা রোগীর বাড়ি লকডাউন করতে যাচ্ছি। লকডাউনে থাকা করোনা সনাক্ত রোগীদের পর্যবেক্ষণ করতে যাচ্ছি। অন্য এলাকা থেকে ও হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসা করোনা রোগীকে আটক করে পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি অথবা আইসোলেশনে রাখছি। আরো কত কি ! অর্থাৎ প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসছি। 

     ধরুন, আগামীকাল করোনা আক্রান্ত হয়ে আমি মৃত্যুবরণ করলাম। তাহলে আমার লাশটা কি কক্সবাজার আমার বাড়িতে পাঠাতে দিবেন না ? যে বাবা-মা মাথার ঘাম পায়ে, ফেলে, লালন-পালন করে, পড়া-লেখা শিখিয়ে, আপনাদের সেবা করার উপযুক্ত করে পাঠালেন, তাদের প্রিয় সন্তানের অন্তিম শয্যার চেহারা শেষ বারের মতো দেখতে দিবেন না ? আমার জনম দুখিনী মা, যে আমার আসার প্রহর গুনে পথ পানে চেয়ে থাকে, সে মাকে হৃদয় ভাঙ্গা করুন আর্তনাদের সুরে, ’আমার পুত আসছে নাকি’ বলার সুযোগ দিবেন না ? আমার বোনদের ভাই হারানোর জমাট ব্যাথা বিলাপ করে বুক হালকা করতে দিবেন না ? ”আমার ভাই চাকরির কারণে দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে ছিল। কেউ কোন দেনা পাওনা থাকলে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন। আমি মিটিয়ে দিব। আমার ভাইকে সবাই মাফ করে দিবেন”- জানাযার আগে আমার ছোট ভাইকে এই কথাটা বলার সুযোগ দিবেন না ? 
-প্লিজ, আর বলবেন না, স্যার। আসলে আমরা এভাবে কখনো ভেবে দেখিনি। আমি এখনি সবাইকে আপনার কথা গুলো শুনিয়ে দিচ্ছি। লাশ দাফনে কাউকে বাধা দিতে দিব না। স্বাস্থ্য বিধি মেনে আমি নিজেও জানাযায় অংশ নিব। 
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ স্যার। 
-আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। 
 পরের দিন একজন প্রফেসর সাহেবের মাধ্যমে খবর নিলাম। ঐ লোকের লাশ এলাকায় আনতে এবং দাফন-কাফনে কোন সমস্যা হয়নি। আশা করি আজ থেকে করোনা আক্রান্ত মৃত দেহ দাফনে কেউ বাধা দিবেন না। কারো অধিকার হরণ করবেন না। স্বাস্থ্য বিধি মেনে লাশ সৎকারে সহায়তা করে নিজ নিজ ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করবেন। 
লেখক-
অফিসার ইনচার্জ
লালমাই থানা, কুমিল্লা।
 তাং-১৩/০৬/২০২০ খ্রিঃ।

সেলাই মেশিন পেলেন ১৫ কর্মহীন নারী : কুমিল্লার সময়





প্রদীপ মজুমদার :
কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে ঘরে বসে উপার্জন করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে  ২নং বাগমারা দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ লোকমান হোসেনের উদ্যোগে আজ ১৪ জুন রবিবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ১৫ জন দরিদ্র ও কর্মহীন মহিলার মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো আবদুল মালেক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে. এম. ইয়াসির আরাফাত।

Wednesday 10 June 2020

দেশের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ নতুন বাজেট করোনা সংকটের মধ্যেই কাল উপস্থাপিত হবে : কুমিল্লার সময়






পি কে মজুমদার  : 
করোনা পরিস্থিতির অবরুদ্ধ সময়কে ছাপিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হচ্ছে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য মোট ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন। এরমধ্যে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। বাজেট উপস্থাপনের জন্য সব প্রস্তুতি শেষ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি হবে আ হ ম মুস্তফা কামালের দ্বিতীয় বাজেট। গত বছর অর্থমন্ত্রী হিসেবে জীবনের প্রথম বাজেট (২০১৯-২০ অর্থবছর) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন শুরু করে বাজেট বক্তৃতা বইয়ের কয়েক পৃষ্ঠা পাঠ করার পর আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বাকি বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, প্রথা অনুযায়ী বাজেট পেশের পরদিন বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনও করতে পারেননি অর্থমন্ত্রী। এটিও করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট। এর আগে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে দুই মেয়াদের অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিত ১০টি বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন।

এদিকে, বাজেট উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ১০ জুন বুধবার থেকে জাতীয় সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশন আহ্বান করেছেন। বিকাল ৫টায় বসছে সংসদের এই অধিবেশন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে ঘাটতির (অনুদানসহ) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ এক লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৬ শতাংশ। এবারের বাজেটের ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। যা এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

সূত্র জানায়, আসন্ন বাজেটে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের বিপরীতে নতুন বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আগামী বছর কর রাজস্ব আহরণ করতে হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত রাজস্ব আহরণ করতে হবে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত প্রাপ্তির পরিমাণ হচ্ছে ৩৩ হাজার ৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা।

২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারের পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এরমধ্যে আবর্তক ব্যয় হচ্ছে ৩ লাখ ১১ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। আবর্তক ব্যয়ের অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে ৫৮ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে ৫ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর বাইরেও সম্পদ সংগ্রহ, ভূমি অধিগ্রহণ, নির্মাণ ও পূর্তকাজ, শেয়ার ও ইক্যুইটিতে বিনিয়োগসহ মূলধনী ব্যয় হবে ৩৬ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। পাশাপাশি ঋণ ও অগ্রিম বাবদ ৪ হাজার ২১০ কোটি টাকা এবং খাদ্য হিসেবে ৫৬৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার অভ্যন্তরীণ খাত থেকে এক লাখ ৯ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নেবে। এরমধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি, সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি এবং অন্যান্য ঋণ নেবে আরও ৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী বছরে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৭৬ হাজার ৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ৫২ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের জিডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট জিডিপি টাকার অঙ্কে ধরা হয়েছিল ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭২ কোটি। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে এটি কাটছাঁট করে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, নতুন অর্থবছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত বা কালো টাকায় কেনা জমি-ফ্ল্যাট বৈধ করার সুযোগ থাকছে। এজন্য প্রতি বর্গমিটার হিসাবে নির্দিষ্ট অঙ্কের কর দিতে হবে। একই সঙ্গে শর্তসাপেক্ষে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে। এছাড়া পণ্য আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা রোধে বাড়তি করারোপের বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের রফতানিতে উৎসে কর বাড়ানো হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বাজেটে আয়কর খাতে শর্তসাপেক্ষে ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ার, স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড, ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ করতে পারবেন যে কেউ। এছাড়া অপ্রদর্শিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ টাকা, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র রিটার্ন প্রদর্শনের মাধ্যমে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। নগদ টাকা, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে মোট অঙ্কের ১০ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ রাখা হচ্ছে।

আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের নতুন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে এক হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাতে সরকারের বরাদ্দ ছিল ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগামী অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৭৬ হাজার কোটি টাকা। করোনার কারণে আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আর্থিক সুবিধাভোগীর সংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ বাড়িয়ে ৯৭ লাখে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বিনিয়োগ বাড়ানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ রয়েছে বাজেটে। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কৃষি খাতকে। ফলে আগামীতে কৃষি খাতে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়বে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। আর অন্যান্য খাতে ভর্তুকি মিলে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে নতুন ৫ লাখ আয়কর দাতাকে করজালে যুক্ত করা হবে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে নতুন আয়করদাতার সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ লাখ ২৩ হাজার। করোনাভাইরাসের কারণে আসন্ন বাজেটে এ সংখ্যা কমানো হচ্ছে।

নতুন অর্থবছরের এডিপিতে সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়া ১০টি খাত হচ্ছে: ১. পরিবহন; ২. অবকাঠামো, পানি ও গণপূর্ত; ৩. বিদ্যুৎ; ৪. শিক্ষা ও ধর্ম; ৫. বিজ্ঞান, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি; ৬. পল্লি উন্নয়ন ও পল্লি প্রতিষ্ঠান; ৭. স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ; ৮, কৃষি; ৯. পানিসম্পদ ও ১০. জনপ্রশাসন। এই ১০ খাতে বরাদ্দ মোট এডিপির ৯৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।

নতুন বাজেটে সরকারের চলমান ৭ মেগা প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা। মেট্রোরেল প্রকল্পে বরাদ্দ ৪ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। মহেশখালী মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে বরাদ্দ ৩ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে বরাদ্দ ১৫০০ কোটি টাকা।

এদিকে, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ ১০ মন্ত্রণালয় হচ্ছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল খাঁন এর ১৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন : কুমিল্লার সময়





প্রদীপ মজুমদার : প্রবীন রাজনীতিবিদ, লাকসাম পৌরসভার সাবেক সফল মেয়র, কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সহ - সভাপতি, বাংলাদেশ পৌরসভা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশন এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোস্তফা কামাল খাঁনের ১৩ তম মৃত্যু বার্ষিক আজ বুধবার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড মিশ্রীতে পারিবারিক ভাবে মিলাদ ও দোয়া পালন করা হয়। সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযুদ্ধা ২০০৭ সালের ১০ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভারতে মারা যান। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা, এবং ৭১ এর যুদ্ধকালীন সময় মুজিব বাহিনীর লাকসাম ও হাজীগঞ্জ এলাকার প্রধান ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বাংগালীর মুক্তির সনদ ৬ দফা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।

বর্তমান এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম ১৯৯৬  সালে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লাকসাম পৌরসভার উন্নয়নে দীর্ঘ ৯ বছর কাজ করেন তিনি। 
লাকসামের উন্নয়ন ও মানুষের জন্য কাজ করে জীবন যৌবন উৎসর্গ করা এই গুণী মানুষটিকে স্বরণ রাখেননি স্হানীয় নেতৃবৃন্দ। 

প্রবীণ এ নেতার মৃত্যুর পর থেকে জেলা ও উপজেলা  আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত কোন শোক ও স্মরণ সভাও করা হয়নি। এমনকি এ নেতার নামে আজ পর্যন্ত লাকসামে কোন জায়গা তার নামে নামকরণ করা হয়নি। লাকসামের বিভিন্ন অলি গলির বিভিন্ন সড়ক সহ বিভিন্ন স্থানের নামে নাম করণ করা হয়েছে। সেখানে কেন একজন আ’লীগ নেতা ও বীরমুক্তিযোদ্ধার নামে সড়কের নামকরণ করা হবেনা এ আক্ষেপ ওই পরিবারের।  এদিকে, এ নেতার স্মৃতি ধরে রাখতে লাকসামে মোস্তফা কামাল খাঁনের নামে নামকরণের দাবী জানিয়েছে তার পরিবার। তারা এব্যাপারে ভূমিকা রাখতে মাননীয় এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও পৌর মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

সাহসী কাজের জন্য পুলিশ সুপার কর্তৃক পুুরস্কৃত হলেন গ্রাম পুলিশ : কুমিল্লার সময়



  

প্রদীপ মজুমদার : কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের হাতীলোটা গ্রামের চারআনী বাড়ীতে রাতের আধারে  বসত ঘরে পেট্রোল ছিটিয়ে নারী হত্যা চেষ্টায় ৩ আসামীকে পুলিশে সোপর্দ করায় সাহসী এ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ওই গ্রামের গ্রাম পুলিশ সোহাগ সর্দার ও প্রতিবেশী খোরশেদ আলমকে পুরস্কৃত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার । আজ বুধবার কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম পিপিএম( বার)  এর পক্ষে তাদের শুভেচ্ছা উপহার ও অর্থ তুলে দেন লালমাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আইউব। 
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের হাতীলোটা গ্রামের পারভীন আক্তারের মেয়ে সালমা কুমিল্লা ইপিজেড এ চাকুরী করার সুবাদে আসামী আবু তাহেরের সাথে ৩ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে আবার তালাকও হয়। তালাকের পর ওই মেয়েকে আবু তাহের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি ও উত্ত্যক্ত করতে থাকলে উপায় অন্তর না দেখে সালমা তার হাতীলোটা গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। গত ৭ জুন দিবাগত রাত আনুমানিক ১.৩০ টায় আসামী কুমিল্লা সদরের বারপাড়া গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে (সাবেক স্বামী)  আবু তাহের তার সহযোগী বারপাড়া এলাকার শুভ মিয়া ও মিঠুন সহ এ্যাম্বুলেন্স করে হাতীলোটা আসে। তারা সালমাদের বাড়ীর সবকটি ঘরে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন দিবে এমন সময় ওই বাড়ীর খোরশেদ আলম টের পেয়ে চিৎকার করলে গ্রাম পুলিশ সোহাগ সর্দার সহ গ্রামবাসীরা এ্যাম্বুলেন্স সহ তাদের পাকড়াও করে লালমাই থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। 
গ্রাম পুলিশ সোহাগ সর্দার ও প্রতিবেশী খোরশেদ আলমের সাহসীকতা কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ কুমিল্লার  পুলিশ সুপার তাদের পুরস্কৃত করেন। 

এব্যাপারে গত ৮ জুন লালমাই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী ২০০৩) এর ৪(৩)৩০ ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়। 

লালমাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আইউব বলেন গ্রাম পুলিশ ও প্রতিবেশী খোরশেদ আলমের সাহসীকতায় অনেকগুলো পরিবারের জীবন রক্ষা হয়েছে। তাদের এই অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম পিপিএম (বার) মহোদয় তাদের পুরস্কৃত করেছেন। এভাবে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ নারী শিশু নির্যাতনে পুলিশের পাশাপাশি  সমাজের লোকজন এগিয়ে আসলে সমাজের সকল অসংগতি দূর করতে সহজ হবে। 

Monday 8 June 2020

লাকসাম থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাচল করছে ট্রেন: কুমিল্লার সময়



প্রদীপ মজুমদার :  করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে দুই মাস সময় ধরে বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঢাকার উদ্দেশ্যে ও চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বিরতিহীন আন্তনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস, সোনারবাংলা, নোয়াখালী টু ঢাকা উপকূল এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম হতে চাঁদপুর মেঘনা এক্সপ্রেস,সিলেটের উদয়ন এক্সপ্রেস লাকসাম জংশন হয়ে চলাচল করছে।

গত ৩১মে রোববার সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেনটি ছেড়ে যায় বলে জানান পূর্ব রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) আনসার আলী।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রেলওয়ের পক্ষ থেকে ‘ব্যাপক সতর্কতামূলক’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লাকসাম রেল স্টেশনের প্রবেশমুখে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রাও পরিমাপ, অনলাইনে কাটা টিকেট দেখে  স্টেশনে প্রবেশ করানো হয়। ফলে বিনা টিকেটে রেলে চড়াও বন্ধ হয়েছে বলে জানান রেল কর্মকর্তা। 

এছাড়া স্টেশনে ঢোকার মুখেই যাত্রীরা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে প্রবেশ করছে কি না তা রেলওয়ে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী, রেলপুলিশ ও রেলের কর্মীরা নিশ্চিত করছেন। যাত্রীদের প্রত্যেককে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে। কম ভাড়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য পরিবহনের সুযোগ আছে লাকসাম রেল স্টেশন থেকে। 

এসময় রেলওয়ে শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও লাকসাম রেলওয়ে শ্রমিকলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাছান আহমেদ পলাশ বলেন,  স্হানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এর নির্দেশনায় লাকসাম রেল স্টেশনের সর্বত্র যাত্রীদের সুরক্ষায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রেনের বগিও জীবানুমুক্ত করা হয়েছে। যাত্রীদের এক গেইট দিয়ে প্রবেশের পর অপর গেইট দিয়ে নির্গমনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বগিতেও সেনিটাইজার রাখা আছে। ট্রেনে দায়িত্বরত কর্মীরাও স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ করছেন। তাদের মাস্ক, গ্লাভস পড়া নিশ্চিত করা হয়েছে। লাকসাম রেলওয়ে স্টেশনের  কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছেন যাত্রীদের। 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর গণপরিবহন বন্ধের অংশ হিসেবে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।

দীর্ঘ বন্ধের পর ৩১মে থেকে সীমিত পরিসরে শুরু হল ট্রেন চলাচল। এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ও সিলেট, চাঁদপুর, নোয়াখালী ট্রেন চলাচল করছে। 
প্রতিটি ট্রেনের শুধু বেজোড় নম্বরের টিকেটগুলো শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। 

লালমাইয়ে ভয়াবহ আগুনে বসতঘর পুড়ে ছাই : কুমিল্লার সময়




প্রদীপ মজুমদার : কুমিল্লার লালমাইয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বসতঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। উপজেলার বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের কানাইয়া পুকুরপাড় মহরম আলী ভূইয়া বাড়ীতে শাহনাজ পারভীনের বসতঘরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ লাখ টাকা।

এলাকবাসী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ৭জুন রবিবার দিবাগত রাত ১২.৩০ টায় কানাইয়া পুকুরপাড় মহরম আলী ভূইয়া বাড়ীতে শাহনাজ পারভীনের ঘরের পাশে খড়কুটোর মধ্যে থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। কে বা কাহারা আগুন ধরিয়ে দিলে মুহূর্তের মধ্যে বৈদ্যুতিক তারে আগুন ধরে সম্পূর্ণ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ওই ঘরে থাকা শাহনাজ পারভীন ও তার বৃদ্ধ মা অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যায়। শাহনাজ পারভীনের স্বামী জামাল হোসেন সৌদি প্রবাসী। শাহনাজ পারভীন বলেন পরার কাপড় ছাড়া কিছুই বের করতে পারিনি। নগদ দুই লক্ষ টাকা, দশ ভরি সোনার গহনা, ফ্রীজ, টিভি আমার সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একথা বলে তিনি বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন।   

খবর পেয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থল গিয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো. বিল্লাল হোসেন  জানান, খড়কুটোর আগুন থেকে বৈদ্যুতিক তারে আগুন লেগে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
 
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিভাবক জামাতা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আরিফুল ইসলাম সৈকত বলেন আমার শ্বশুর প্রবাসী। আমার শ্বাশুড়ি ও ওনার মা এখানে থাকেন আমি তাদের দেখাশুনা করি। খড়কুটোর থেকে এভাবে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে না। আমার মনে হয় কেউ আগুন ধরিয়ে দিতে পারে। নগদ অর্থ সহ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। 
 
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়াতুল্লাহ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সাইফুদ্দিন পাপ্পু, যুবলীগ নেতা কাজী কামরুল হাসান ভুট্টো, রফিকুল ইসলাম মোহন ও ছাত্রলীগ নেতা হান্নান মিয়াজি।  

Saturday 6 June 2020

ছয় দফা বাংগালীর মুক্তির সনদ : কুমিল্লার সময়






প্রতি বছর আমাদের জাতীয় জীবনে ৭ জুন তথা ‘ছয় দফা দিবস’ ফিরে আসে এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় আমরা দিনটি পালন করি। কিন্তু এবার ‘করোনাভাইরাস’ তথা ‘কভিড-১৯’ মহামারী আকারে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশও আক্রান্ত। ফলত, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সতর্কতার অংশ হিসেবে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ’ তথা ‘মুজিববর্ষ’, ‘গণহত্যা দিবস’, ‘স্বাধীনতা দিবস’, ‘বাংলা নববর্ষ’, ‘মুজিবনগর দিবস’ এবং ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ পালন উপলক্ষে গৃহীত রাষ্ট্রীয় ও দলীয় অনুষ্ঠানাদি সীমিতকরণ বা স্থগিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমি আশা করি, সরকার সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশাবলি অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করবে এবং দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ছয় দফা ও ৭ জুন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। আমাদের জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ছয় দফা ও ৭ জুনের গুরুত্ব অপরিসীম। যে কারণে প্রতি বছর ৭ জুন আমরা ‘ছয় দফা দিবস’ পালন করি। ১৯৬৬-এর এই দিনে মনু মিয়া, মুজিবুল্লাহসহ অসংখ্য শহীদের রক্তে রঞ্জিত হয় ঐতিহাসিক ছয় দফা। পরবর্তীতে ’৬৯-এর গণআন্দোলনের সূচনালগ্নে এই ছয় দফা দাড়ি-কমা-সেমিকোলনসমেত ১১ দফায় ধারিত হয়ে, ’৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা এক দফা তথা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতা ছিলেন।

তার হৃদয়ের গভীরে সততই প্রবহমান ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার বাইরে অন্য কোনো চিন্তা তার ছিল না। জেল-জুলম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে বাংলাদেশকে তিনি স্বাধীন করেছেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রবক্তা। আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে সর্ব ধর্মের, সর্ব বর্ণের, সর্ব শ্রেণির মানুষের জন্য তিনি আওয়ামী লীগের দরজা উন্মুক্ত করেছিলেন।
তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশ হবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। যার যার ধর্ম সেই সেই পালন করবে। কারও ধর্ম পালনে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের অভিপ্রায় থেকেই তিনি জাতির উদ্দেশে ছয় দফা কর্মসূচি প্রদান করেছিলেন।
বাংলার গণমানুষ ’৬৬-এর ৭ জুন স্বাধিকার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বব্যাপী হরতাল পালন করেছিল

স্বৈরশাসক আইয়ুব খান এ দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে সংখ্যাগুরু বাঙালি জাতিকে গোলামির শৃঙ্খলে চিরস্থায়ীভাবে শৃঙ্খলিত করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছিল। এর বিপরীতে, বাংলার প্রাণপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ’৬৬-এর ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে সম্মিলিত বিরোধী দলসমূহের এক কনভেনশনে বাংলার গণমানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের দাবি সংবলিত বাঙালির ‘মুক্তিসনদ’ খ্যাত ঐতিহাসিক ‘ছয় দফা’ দাবি উত্থাপন করে তা বিষয়সূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন। কিন্তু সভার সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মদ আলী ‘ছয় দফা’ দাবি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলে ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে ঢাকা বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ও ২০ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ‘ছয় দফা’ দলীয় কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। বাংলার মানুষের মুক্তিসনদ ‘ছয় দফা’ ঘোষণার পর জনমত সংগঠিত করতে বঙ্গবন্ধু তাঁর সফর সঙ্গীসহ ’৬৬-এর ২৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানের জনসভায় ‘ছয় দফা’কে ‘নতুন দিগন্তের নতুন মুক্তিসনদ’ হিসেবে উল্লেখ করে চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘একদিন সমগ্র পাক-ভারতের মধ্যে ব্রিটিশ সরকারের জবরদস্ত শাসন ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে এই চট্টগ্রামের জালালাবাদ পাহাড়েই বীর চট্টলার বীর সন্তানরা স্বাধীনতার পতাকা উড্ডীন করেছিলেন। আমি চাই যে, পূর্ব পাকিস্তানের বঞ্চিত মানুষের জন্য দাবি আদায়ে সংগ্রামী পতাকাও চট্টগ্রামবাসীরা চট্টগ্রামেই প্রথম উড্ডীন করুন। ’ চট্টগ্রামের জনসভার পর দলের আসন্ন কাউন্সিল সামনে রেখে ‘ছয় দফা’র যৌক্তিকতা তুলে ধরতে তিনি একের পর এক জনসভা করেন। এরই অংশ হিসেবে ২৭ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর মাইজদী, ওই দিনই বেগমগঞ্জ, ১০ মার্চ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, ১১ মার্চ ময়মনসিংহ সদর ও ১৪ মার্চ সিলেটে অনুষ্ঠিত জনসভায় জনতার দরবারে তার বক্তব্য পেশ করেন।


‘ছয় দফা’ প্রচার ও প্রকাশের জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট ‘উপ কমিটি’ গঠন এবং তারই নামে ‘আমাদের বাঁচার দাবি : ছয় দফা কর্মসূচি’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। একই বছরের মার্চের ১৮, ১৯ ও ২০ তারিখ ছিল আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন। এ দিন কাউন্সিল সভায় পুস্তিকাটি বিলি করা হয়। দলের সিনিয়র সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গীত হয়। বাঙালির বাঁচার দাবি ‘ছয় দফা’কে উপলক্ষ করে ’৬৬-এর মার্চে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের তিন দিনব্যাপী কাউন্সিল অধিবেশনটি ছিল সবিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সেদিনের সেই কাউন্সিল সভায় আগত ১৪৪৩ জন কাউন্সিলর বঙ্গবন্ধুকে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি, তাজউদ্দীন আহমদকে সাধারণ সম্পাদক ও মিজানুর রহমান চৌধুরীকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত করে। ‘ছয় দফা’র ভিত্তিতে সংশোধিত দলীয় গঠনতন্ত্রের একটি খসড়াও অনুমোদন করা হয়। ‘ছয় দফা’ কর্মসূচি প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে ‘ছয় দফা’র ভিত্তিতে দলীয় গঠনতন্ত্র এবং নেতৃত্ব নির্বাচনে যে পরিবর্তন সাধিত হয় তা পরবর্তীকালে ‘ছয় দফা’র চূড়ান্ত পরিণতি এক দফা তথা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের ইঙ্গিতবাহী ছিল। ‘ছয় দফা কর্মসূচি’ দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিশেষ করে আমাদের মতো অপেক্ষাকৃত তরুণ ছাত্রলীগ নেতৃত্বের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ‘ছয় দফা’ এতই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে, বাংলার প্রায় প্রতিটি ঘরে এই পুস্তিকা সযত্নে রক্ষিত হয়েছিল। ‘ছয় দফা’ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলতেন, ‘সাঁকো দিলাম, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়ার জন্য। ’ বস্তুত, ‘ছয় দফা’ ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্র তথা অঙ্কুর। কাউন্সিল অধিবেশনের শেষ দিন অর্থাৎ ২০ মার্চ চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে ঢাকার পল্টন ময়দানের জনসভায় দলীয় নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর উদ্দেশে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘চরম ত্যাগ স্বীকারের এই বাণী লয়ে আপনারা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ুন। পূর্ব পাকিস্তানের প্রত্যন্ত প্রদেশের প্রতিটি মানুষকে জানিয়ে দিন, দেশের জন্য, দশের জন্য, অনাগতকালের ভাবী বংশধরদের জন্য সব কিছু জেনে-শুনেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এবার সর্বস্ব পণ করে নিয়মতান্ত্রিক পথে ছয় দফার ভিত্তিতে দেশব্যাপী আন্দোলনের জন্য এগিয়ে আসছে। ’

আওয়ামী লীগের এই কাউন্সিল অধিবেশনটি ছিল বাঙালির ইতিহাসে বাঁক পরিবর্তন। যা ’৬৯-এর মহান গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচন ও ’৭১-এর মহত্তর মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরি করেছিল। কাউন্সিল সভার সমাপনী জনসভায় বঙ্গবন্ধু মুজিব বলেছিলেন, ‘ছয় দফার প্রশ্নে কোনো আপস নেই। রাজনীতিতেও কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই। নেতৃবৃন্দের ঐক্যের মধ্যেও আওয়ামী লীগ আর আস্থাশীল নয়। নির্দিষ্ট আদর্শ ও সেই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের ঐক্যেই আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ নেতার দল নয়Ñএ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের প্রতিষ্ঠান। শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই ছয় দফা আদায় করতে হবে। কোনো হুমকিই ছয় দফা আন্দোলনকে প্রতিরোধ করতে পারবে না। ছয় দফা হচ্ছে বাঙালির মুক্তি সনদ। ’ স্বভাবসুলভ কণ্ঠে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’ উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, ‘এই আন্দোলনে রাজপথে যদি আমাদের একলা চলতে হয়, চলব। ভবিষ্যৎ ইতিহাস প্রমাণ করবে বাঙালির মুক্তির জন্য এটাই সঠিক পথ। ’ বঙ্গবন্ধু জানতেন, ‘ছয় দফা’ই কেবল বাঙালির স্বাধিকার তথা পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত কর অখন্ড পাকিস্তানের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে। পক্ষান্তরে, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর একটি অতি ক্ষুদ্র অংশ পাঞ্জাবিরা ‘ছয় দফা’ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সংখ্যাগুরু বাঙালির রাষ্ট্র ক্ষমতায় আরোহণ ঠেকাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে- যা পরিণামে স্বাধীন বাংলাদেশের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে। সফলভাবে সমাপ্ত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের পর বঙ্গবন্ধু সারা দেশ চষে বেড়ান।

২৬ মার্চ সন্দ্বীপ এবং ২৭ মার্চ সাতকানিয়ার বিশাল জনসভায় ‘ছয় দফা কর্মসূচি’ ব্যাখ্যা করে বক্তৃতা করেন। এরপর উত্তরাঞ্চল সফরে যান ’৬৬-এর ৭ এপ্রিল। ওই দিন পাবনা ও নগরবাড়ীর জনসমাবেশে বক্তৃৃতা করেন। একই মাসের ৮ তারিখ বগুড়া, ৯ তারিখ রংপুর, ১০ তারিখ দিনাজপুর, ১১ তারিখ রাজশাহী, ১৪ তারিখ ফরিদপুর, ১৫ তারিখ কুষ্টিয়া, ১৬ তারিখ যশোর এবং ১৭ তারিখ খুলনায় বিশাল সব জনসভায় ছয় দফার বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণসহ বক্তৃতা করেন। এভাবে সারা দেশে ৩৫ দিনে মোট ৩২টি জনসভায় তিনি বক্তৃতা করেন। বিপুলসংখ্যক জনতার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত লাগাতার জনসভায় প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতায় ‘ছয় দফা’র সপক্ষে জনমত প্রবল হয়ে ওঠে। ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের ওপর নেমে আসে স্বৈরশাসক আইয়ুবের নির্মম গ্রেফতার-নির্যাতন। প্রত্যেক জেলায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রদত্ত বক্তৃতার প্রতিপাদ্য বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধুকে প্রত্যেক জেলা থেকে জারিকৃত ওয়ারেন্ট বলে লাগাতার গ্রেফতার প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এপ্রিলের ১৭ তারিখ রাত ৪টায় খুলনায় এক জনসভায় ভাষণদান শেষে ঢাকা ফেরার পথে রমনা থানার জারিকৃত ওয়ারেন্ট অনুযায়ী পাকিস্তান দেশরক্ষা আইনের ৪৭(৫) ধারা বলে পুলিশ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। যশোর মহকুমা হাকিমের এজলাস থেকে তিনি জামিন পান। সে দিনই রাত ৯টায় সিলেটে গ্রেফতার, পুনরায় জামিনের আবেদন এবং ২৩ তারিখ জামিন লাভ। ২৪ এপ্রিল ময়মনসিংহে গ্রেফতার, ২৫ এপ্রিল জামিন। ‘ছয় দফা’ প্রচারকালে তিন মাসে বঙ্গবন্ধুকে সর্বমোট আটবার গ্রেফতার করা হয়। এভাবেই আইয়ুবের দমননীতি অব্যাহত থাকে। একই বছরের ৮ মে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় ঐতিহাসিক ‘মে দিবস’ স্মরণে শ্রমিক জনতার এক বিরাট সমাবেশে শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধুকে বিপুল সংবর্ধনা জ্ঞাপন করে এবং পাটের মালায় ভূষিত করে। ভাষণদান শেষে রাত ১টায় তিনি যখন বাসায় ফেরেন তখন পাকিস্তান দেশরক্ষা আইনের ৩২(১) ‘ক’ ধারা বলে তাকেসহ তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। ‘ছয় দফা’ দেওয়াকে অপরাধ গণ্য করে স্বৈরশাসক আইয়ুব বঙ্গবন্ধুকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে অভিহিত করে দেশরক্ষা আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের ওপর অব্যাহত গ্রেফতার-নির্যাতন চালায়। সামরিক সরকারের এহেন কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের আহ্বানে ১৩ মে সমগ্র প্রদেশে ‘প্রতিবাদ দিবস’ পালিত হয়। প্রতিবাদ দিবসের জনসভায় ‘ছয় দফা’র প্রতি গণমানুষের বিপুল সমর্থন প্রকাশ পায়। হাজার হাজার শ্রমিক এই দিন স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালন করে এবং পল্টনে অনুষ্ঠিত জনসভায় উপস্থিত হয়ে সরকারের দমন নীতির তীব্র প্রতিবাদ করে। দলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদকে গ্রেফতার করা হলে সাংগঠনিক সম্পাদক মিজান চৌধূরী অস্থায়ী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নেতৃবৃন্দের গ্রেফতার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ২০ মে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ‘সাতই জুন’ সর্বব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হয়। সাতই জুনের হরতালে সমগ্র পূর্ব বাংলা যেন অগ্নিগর্ভ। বিক্ষুব্ধ মানুষ স্বাধিকার ও বঙ্গবন্ধুসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়।

আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রলীগের সার্বক্ষণিক কর্মী, ইকবাল হল (বর্তমানে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ছাত্রসংসদের নির্বাচিত ভিপি। সর্বজনাব শেখ ফজলুল হক মণি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক, আমীর হোসেন আমু, সৈয়দ মাজহারুল হক বাকী, আবদুর রউফ, খালেদ মোহাম্মদ আলী, নূরে আলম সিদ্দিকীসহ আরও অনেকে- আমরা সে দিন হরতাল কর্মসূচি পালনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করি। সেদিনের হরতাল কর্মসূচিতে ধর্মঘটী ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহিনী নির্বিচার গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে তেজগাঁওয়ে শ্রমিক মনু মিয়া, মুজিবুল্লাহসহ ১১ জন শহীদ হন এবং প্রায় ৮০০ লোককে গ্রেফতার করা হয়। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে হরতাল সফল করার দায়িত্বে ছিলেন ছাত্রনেতা খালেদ মোহাম্মদ আলী ও নূরে আলম সিদ্দিকী। তারা সেখানে বক্তৃতা করেন। প্রকৃতপক্ষে ৭ জুন ছিল স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার পথের আরম্ভস্থল তথা যাত্রাবিন্দু। আর আমরা যারা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, আমাদের স্বাধীনতার চেতনার ভিত্তিও স্থাপিত হয়েছিল এই দিনটিতেই।

১৯৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারির মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬২-এর ১৭ সেপ্টেম্বরের ‘শিক্ষা আন্দোলন’; ‘৬৬-এর ৭ জুন ‘ছয় দফা আন্দোলন’; ’৬৯-এর ১৭ থেকে ২৪ জানুয়ারির ‘গণআন্দোলন-গণঅভ্যুত্থান’; ৯ ফেব্রুয়ারি ১১-দফা বাস্তবায়ন ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে ‘শপথ দিবস’ পালন; স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পদত্যাগ; আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুসহ সব রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি লাগাতার সংগ্রাম শেষে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম প্রদান; অতঃপর ২২ ফেব্রুয়ারি সব রাজবন্দীর মুক্তির পর বঙ্গবন্ধুর মুক্তিলাভ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ১০ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে ‘মুক্ত মানব শেখ মুজিব’কে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি প্রদান। পঞ্চাশের দশক থেকে বাঙালির জাতীয় মুক্তি-সংগ্রামের লক্ষ্যে গড়ে তোলা সব আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ।

এসব মহিমান্বিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগ অর্জন করেছিল গণতান্ত্রিক তথা নিয়মতান্ত্রিক আচরণ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং জয় করে নিয়েছিল বাংলার মানুষের হৃদয় আর সৃষ্টি করেছিল ইতিহাস। অতীতে আমাদের সময়ে ছাত্রলীগের সম্মেলন গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রতি বছর ২১ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা ছিল। তা না হলে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটির কাছে নেতৃত্ব তুলে দিতে হতো। এটাই ছিল বিধান এবং গঠনতান্ত্রিক বিধি-বিধানের অন্যথা হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। বিধান মোতাবেক ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পর আমি ছাত্রলীগের সভাপতি এবং আ স ম আবদুর রব সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে এক বছর পরে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ২১ মার্চের মধ্যে সম্মেলন করে নূরে আলম সিদ্দিকী এবং শাজাহান সিরাজের কাছে নেতৃত্বের দায়িত্বভার অর্পণ করে আমাদের কমিটি বিদায় নেই এবং ২২ মার্চ হল ত্যাগ করে গ্রিন রোডে ‘চন্দ্রশীলা’ নামে একটি বাসা ভাড়া করে আমি এবং রাজ্জাক ভাই বসবাস শুরু করি। আজ অতীতের সেই সোনালি দিনগুলোর দিকে যখন ফিরে তাকাই স্মৃতির পাতায় দেখি, সে দিনের ছাত্রলীগ ছিল বাংলার গণমানুষের অধিকার আদায় তথা ‘মুজিব আদর্শ’ প্রতিষ্ঠার ভ্যানগার্ড। মূলত বঙ্গবন্ধু মুজিবের নির্দেশে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতৃত্বই সে দিন সারা দেশে ৭ জুনের কর্মসূচি সফলভাবে পালন করে স্বাধিকারের পথে এক অনন্য নজির স্থাপন করে। আর বাংলার মেহনতী মানুষ আত্মত্যাগের অপার মহিমার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীসহ সমগ্র বিশ্বকে জানিয়ে দেয় যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রদত্ত ‘ছয় দফা’ই হচ্ছে বাঙালির জাতীয় মুক্তির একমাত্র পথ।

‘ছয় দফা’কে প্রতিহত করার জন্য পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী বহু ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু ‘ছয় দফা’র প্রতি বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় স্থির-প্রতীজ্ঞাবোধ তাকে জনমনে জনগণমন অধিনায়কের আসনে অধিষ্ঠিত করে। ’৬৬-এর ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে নিক্ষেপ করে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়েও ‘ছয় দফা’ আন্দোলনকে যখন রোধ করা যাচ্ছিল না, তখন বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে চিরতরে তাঁর কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য’ মামলা দেন। ‘ছয় দফা’ দাবি আদায়ে এবং বঙ্গবন্ধুকে কারামুক্ত করতে বাংলার সর্বস্তরের মানুষসহ আমরা যারা ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম তারা ’৬৯-এর জানুয়ারির ৪ তারিখে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনটিতে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে ছয় দফাকে এগারো দফায় অন্তর্ভুক্ত করে সারা বাংলার গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে, কলে-কারখানায় ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। ফলশ্রুতিতে এগারো দফা আন্দোলনের স্বপক্ষে সারা দেশে যে গণজোয়ার তৈরি হয় তাতে দেশে বৈপ্লবিক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। এমতাবস্থায় শাসক শ্রেণি গণআন্দোলনকে নস্যাৎ করতে আমাদের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে চিত্রিত করে। তাদের এই অপপ্রয়াসের সমুচিত জবাব দিতে ’৬৯-এর ৯ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের শপথ দিবসের জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু মুজিবের নির্দেশে বলেছিলাম, ‘পূর্ব বাংলার মানুষ কোনো দিন বিচ্ছিন্নতাকে প্রশ্রয় দেয়নি এবং বিচ্ছিন্নতায় বিশ্বাসীও নয়। কারণ তারা সংখ্যায় শতকরা ৫৬ জন। যদি কারও পূর্ব বাংলার সঙ্গে থাকতে আপত্তি থাকে তবে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। ’ নেতার এই নির্দেশ আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মেনে চলেছি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী গণহত্যা চালানোর আগ পর্যন্ত কোনো রকম উগ্রতাকে অতি বিপ্লবীপনাকে আমরা প্রশ্রয় দিইনি। নিয়মতন্ত্রের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম পরিচালনা করেছেন। বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিযোগে আমাদের কখনই অভিযুক্ত করা যায়নি। আমরা আমাদের মুক্তি-সংগ্রামের ন্যায্যতা প্রমাণ করে মুক্তিসংগ্রামী হিসেবেই এগিয়ে গেছি। আর এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে ৭ জুনের কর্মসূচি পালনকালে শহীদদের বীরত্বপূর্ণ আত্মদান।

ছয় দফার পক্ষে ৭ জুনের হরতাল এতটাই সর্বব্যাপী ছিল যে, স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে এ সম্পর্কে প্রতিবেদন মুদ্রণ ও প্রকাশের ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করেছিল। ৭ জুনের সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি ও ‘ছয় দফা’র পক্ষে জনমত তৈরিতে দৈনিক ইত্তেফাকের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে ৬৬-এর ১৬ জুন পাকিস্তান প্রতিরক্ষা বিধির ৩২(১) ধারায় তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে গ্রেফতার এবং দ্য নিউ নেশন প্রিন্টিং প্রেস বাজেয়াপ্ত করে। পরে, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের ফলে দৈনিক ইত্তেফাক এবং বাজেয়াপ্তকৃত নিউ নেশন প্রিন্টিং প্রেসটি ফেরত প্রদানে স্বৈরশাসক বাধ্য হয়েছিল। ‘ছয় দফা’ দাবি আদায় ও পাকিস্তানের স্বৈরতান্ত্রিক শাসন থেকে মুক্তির জন্য ৭ জুনে যে সার্বভৌম পার্লামেন্টের দাবিতে আমরা ছয় দফার পক্ষে সংগ্রাম করেছিলাম সেই কর্মসূচির ফলশ্রুতিই হচ্ছে আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ। ৭ জুন ছিল এর সূচনা বিন্দু। আজ ভাবতে কত ভালো লাগে, আমাদের জাতীয় জীবনে শত শহীদের রক্তে লেখা এ দিনটি চেতনায় জাতীয় মুক্তির যে অগ্নিশিখার জন্ম দিয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় ’৭০-এ জুনের ২ তারিখে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এবং তারই নির্দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করি। আমি হই আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ কর্মী। আওয়ামী লীগে যোগদানের পর বঙ্গবন্ধু আমাকে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে মনোনয়ন দেন এবং মাত্র ২৭ বছর এক মাস ১৫ দিন বয়সে আমি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হই। এরপর ’৭১-এ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ও নির্দেশে মুজিব বাহিনীর চার প্রধানের অন্যতম হয়ে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করি। স্বাধীনতার পর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হয়ে ১৪ জানুয়ারি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় আমাকে তার রাজনৈতিক সচিব নিয়োগ করেন।

আজ ৭ জুনে অতীতের অনেক স্মৃতি আমার মানসপটে ভেসে ওঠে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। বঙ্গবন্ধুর স্নেহে আমার জীবন ধন্য। ৭ জুনের চেতনাবহ এ দিনটি আমার জীবনে অম্লান হয়ে আছে। ৭ জুনে যে সব শহীদ ভাই তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে, বাংলার মানুষের মুক্তির পথকে প্রশস্ত করে গিয়েছেন, আজ তাদের পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। তাদের অমর প্রাণের বিনিময়ে সংগ্রাম পরম্পরায় এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ কায়েম হয়েছে। শহীদের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে জাতির পিতার সংগ্রামী চেতনার ভিত্তিতে, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ আমরা উন্নয়নের নবদিগন্তের সূচনা করেছি। প্রকৃতপক্ষে ঐতিহাসিক ৭ জুন ছিল আমাদের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার চেতনার প্রারম্ভ বিন্দু। এ দিনটিতে ৭ জুনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন কর্তব্য বলে মনে করি।


লেখক : আওয়ামী লীগ নেতা; সংসদ সদস্য; সভাপতি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। ই-মেইল : tofailahmed69@gmail.com

Thursday 4 June 2020

ধরাছোঁয়ার বাইরে কৃষক আমানউল্লাহর মূল হত্যাকারীরা : কুমিল্লার সময়




  
 লালমাই (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
কৃষক আমানউল্লাহ(৬৫) । মেয়ের সঙ্গে অশালীন আচরণের প্রতিবাদ করায় প্রকাশ্য দিবালোকে আছড়ে হত্যা করা হয়েছে তাকে। পরিবার ও এলাকার মানুষের সামনে দিনের আলোয় দুমড়ে আছড়ে গুরুতর আহত করার দৃশ্য দেখেছে মানুষ । মধ্যযুগীয় বর্বর ও অবিশ্বাস্য এমন হামলা সমাজের মানুষের হৃদয় কাঁপিয়ে দিয়েছে।

গত ১৮ এপ্রিল এমন ঘটনার পর প্রায় দেড় মাস হয়ে গেলেও এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন এ হত্যাকাণ্ডের মূল আসামী স্হানীয় ইউপি মেম্বার দেলোয়ার হোসেন দেলু গংরা। ইতোমধ্যেই,তোফাজ্জল, রবিউল, বিল্লাল, নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হলেও গ্রেফতার করা যায়নি মূল হোতাদের। স্থানীয়রা বলছেন, মূল অপরাধীদের পেছনে শক্তিশালী রাজনৈতিক আশ্রয় থাকায় মূল অপরাধীরা পূর্বে বিভিন্ন অপরাধ করেও পার পেয়ে গেছেন।

অন্যদিকে পুলিশ বলছে, তারা সর্বশক্তি দিয়েই আমানউল্লাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে হত্যাকাণ্ডের দেড় মাসেও মূল আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু মেম্বার,  সোহাগ , তোফায়েল, মাহাবুল হককে গ্রেফতার করতে পারেনি। 

জানা যায় গত ১৭ এপ্রিল মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় শূন্যে তুলে আছাড় মেরে কৃষক বাবাকে হত্যা করেছেন এক ইউপি সদস্য। গত ১৭ এপ্রিল শুক্রবার কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ইছাপুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার ১৮ এপ্রিল ওই কৃষক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের কৃষক আমান উল্লাহর এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি মেম্বার দেলোয়ার হোসেন মজুমদারের ছোট ভাই কাঠমিস্ত্রী সোহরাব।

গত ১৬ এপ্রিল রাত ১১টায় দিকে সোহরাব আমান উল্যাহর বাড়িতে গিয়ে তার মেয়েকে ডাকাডাকি শুরু করে। এসময় আমান উল্যাহ ও তার ছেলেরা চোর চোর বলে চিৎকার দেয়। তাদের চিৎকার শুনে আশেপাশের বাড়ির লোকজন বেরিয়ে আসে।

খুঁজতে গিয়ে সবাই দেখে সোহরাব বাড়ির পাশের ধান খেতে শুয়ে আছে। এসময় তাকে ধরে উত্তম মধ্যম দেয়।
এখবর পেয়ে সোহরাবের ভাই দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে ১০/১২জন রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমান উল্যাহর বাড়িতে হামলা করে।  

পরদিন ১৭ এপ্রিল দুপুরে গ্রামের গণ্যমান্যদের আমান উল্যাহ বিষয়টি জানায়। গ্রামবাসীকে জানানোর কারণে দুপুরে দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে তার ভাইসহ কয়েকজন আমান উল্যাহকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়।

ঘর থেকে বের করার সময় দেলোয়ার মেম্বার আমান উল্যাহকে শূন্যে তুলে মাটিতে আছাড় দেয়। এরপর সবাই মিলে তাকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে ইছাপুরা গ্রামের শহীদের বাড়ির সংলগ্ন সড়কের পাশে ফেলে দেয়।  
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। এঘটনায় আমান উল্যাহর ছেলে আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ওই দিন বিকালে দেলোয়ার মেম্বারসহ এজাহারভুক্ত ৪জন ও অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।  

গত ১৮ এপ্রিল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় লালমাই থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ইছাপুরা গ্রামের ফজর আলীর ছেলে তোফাজ্জল ও আজগর আলীর ছেলে রবিউলকে আটক করে।  

নিহতের ছেলে ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল জলিল সাংবাদিকদের বলেন, খুনিরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে আসামীরা গ্রেফতার হচ্ছে না। আমার বোনকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে আমার বাবাকে খুন করা হয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই খুনি দেলুসহ তার ভাইদের গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই। 
 
লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, নিহতের ছেলে আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত ১৮ এপ্রিল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিমের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা শাহবাগ থানার মাধ্যমে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করি। দায়েরকৃত মামলায় ৩০২ ধারা সংযুক্তের জন্য আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ করি। এখন পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছি। ইউপি মেম্বার দেলোয়ারসহ বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

আসামীদের গ্রেফতারে লালমাই সহ পাশ্ববর্তী সকল জেলা ও উপজেলায় নজরদাড়ির ব্যবস্থা জোরদাড় করা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ ও সাদাপোশাকধারী পুলিশের নজরদাড়িও বাড়ানো হয়েছে।

Tuesday 2 June 2020

ফ্রেন্ড সোসাইটি লালমাই এর ঈদ পূর্ন মিলনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত : কুমিল্লার সময়



 

প্রদীপ মজুমদার : বন্ধুত্বের শক্তি একাকিত্বের মুক্তি, সামাজিক অবক্ষয় বন্ধুত্ব করবে জয় এই শ্লোগানকে সামনে রেখে পথ চলা শুরু সামাজিক সংগঠন লালমাই ফ্রেন্ড সোসাইটির। দেশ বিদেশে বহু সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা, সংগঠন সৃষ্টি যার নেশা, মানব সেবায় নিবেদিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
সদালাপী বিচক্ষণ দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী সজ্জন অধ্যাপক আলমগীর হোসেন অপুর হাত ধরে সংগঠনটি ইতিমধ্যে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের দুঃখ দূর্দশা লাগবে কাজ করে যাচ্ছে। 
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে সচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্য সহায়তা, ঈদ উপহার নিয়ে পাশে দাড়িয়েছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের পাশে। 
ধান কেটে পৌঁছে দিয়েছেন কৃষকের বাড়ী। 

সৃষ্টিলগ্ন থেকে এক ঝাঁক তরুণ উদীয়মান যুবক  সংগঠনের সকল সদস্যর সমন্বয়ে আত্ন মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। আগামীদিনে সকলে একসাথে কাজ করবেন এমনটাই আশা পোষণ করছেন ফ্রেন্ড সোসাইটির বন্ধুরা। 

কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের মনোহরপুরে আজ ০২ জুন বিকেলে ফ্রেন্ড সোসাইটি লালমাই এর উদ্যোগে ঈদ পূর্ন মিলনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 
ফ্রেন্ড সোসাইটির আহবায়ক কাউসার আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বিশিষ্ট সংগঠক অধ্যাপক আলমগীর হোসেন অপু। 
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক এম এ মোতালেব, বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সামছুল হক মুন্সী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, সাবেক বৃহত্তর পেরুল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও পেরুল উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হোসেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল বাশার, ইঞ্জি. মহিনুল ইসলাম, বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী হাবিব, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ. সোলায়মান, আমির হোসেন প্রমুখ।
এসময় ফ্রেন্ড সোসাইটির উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন হতে আগত সদস্য বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  

লালমাইয়ে করোনায় আক্রান্ত উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার : কুমিল্লার সময়



লালমাই প্রতিনিধি : কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারায় তোফায়েল আহমেদ নামের একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বরুড়া উপজেলার গালিমপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত । গত ২৮ মে বরুড়া সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা তার নমুনা সংগ্রহ করেন। ২ জুন মঙ্গলবার দুপুরে তার করোনা পজেটিভ আসে। সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি করোনা পজিটিভ কোন রোগী থেকে সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। তার গ্রামের বাড়ী লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর হলেও তিনি বাগমারা দক্ষিণ বাজারস্থ একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ঈদুল ফিতরের আগে থেকে তিনি বাসার বাহিরে যাতায়াত বন্ধ করে বাসায় আলাদা কক্ষে থাকতে শুরু করেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি সকলের দোয়া চেয়েছেন।

বরুড়া থানার ওসির বেতার বার্তা পেয়ে লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব মঙ্গলবার বিকালে করোনা পজিটিভ তোফায়েলের বাগমারাস্থ বাসা লকডাউন করিয়েছেন।

লালমাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা: জয়াশীষ রায় বলেন, করোনা পজেটিভ তোফায়েল আহমেদ বরুড়ায় কর্মরত হওয়ায় লালমাইয়ের পরিসংখ্যানে তার তথ্য যোগ হবে না। তবে বুধবার সকালে তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের নমুনা লালমাইয়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা সংগ্রহ করবে।

উল্লেখ্য ২ জুন পর্যন্ত লালমাইয়ে ২৪৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৯৪ টি রিপোর্ট পেয়েছি। এদের মধ্যে ৫ জন পজেটিভ। সুস্থ হয়েছেন ৩ জন। পজেটিভ হয়ে মৃত্যু ১জন, উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু ২জন।

Monday 1 June 2020

লাকসামে সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে সওজের জায়গায় মার্কেট নির্মান : কুমিল্লার সময়





লাকসাম প্রতিনিধি : কুমিল্লার লাকসাম-মুদাফরগঞ্জ সড়কের খুন্তা নামক স্থানে প্রশাসনের বাধাঁ উপেক্ষা করে সড়ক ও জনপদের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে র্মাকেট নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আজ (১ জুন) সোমবার সড়ক ও জনপদের লাকসামের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আজিম উদ্দিন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।

জানা যায়, লাকসাম-মুদাফরগঞ্জ সড়কের খুন্তা নামক স্থানে ওই এলাকার ছেরাজুল হকের ছেলে ফারুক হোসেন সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে র্মাকেট নির্মান করে।

 
সরকারী জায়গা অবৈধভাবে দখল করে র্মাকেট নির্মানের বিষয়টি জানার পর প্রথমে পশ্চিমগাঁও তহসিল অফিসের নায়েব কে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে। পরদিন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) স্ব-শরিরে উপস্থিত হয়ে পুনরায় কাজ বন্ধ করেন।

সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে র্মাকেট নির্মান বিষয়টি লাকসামের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আজিম উদ্দিন জানার পর সুপারভাইজার মাসুম কে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করার আদেশ প্রদান করেন।

অবৈধভাবে দখলদার ফারুক হোসেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও সওজ উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আজিম উদ্দিনের আদেশ কে অমান্য করে রাতের আধাঁরে ওই র্মাকেট নির্মানের কাজ সমাপ্ত করে।

অভিযুক্ত ফারুক জানায়, পুর্বের দখলদার থেকে সে কয়েক লাখ টাকায় এ জায়গা ক্রয় করেন। ধারদেনা করে র্মাকেট নির্মানের কাজে হাত দিয়েছেন। সরকারী জায়গায় আরো বহু লোক দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন।

সড়ক ও জনপদের লাকসামের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আজিম উদ্দিন বলেন, সুপারভাইজার কে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করার আদেশ প্রদানের পরও সে কাজ করায় থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) উজালা রানী চাকমা বলেন,সরকারী জায়গা অবৈধভাবে দখল করে র্মাকেট নির্মানের বিষয়টি জানার পর প্রথমে নায়েব কে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করা হয়েছে। পুনরায় স্ব-শরিরে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ করেছি। সে আবারও ওই র্মাকেট নির্মান করে সরকারী আদেশ অমান্য করায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লালমাইয়ে দাখিল পরীক্ষায় শতভাগ পাশ নন এমপিও জামিরা মহিলা মাদ্রাসা : কুমিল্লার সময়




লালমাই প্রতিনিধি :
কুমিল্লায় লালমাই উপজেলার ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের জামিরা মহিলা দাখিল মাদ্রাসাটি নন এমপিও হয়েও ২০২০ সনের দাখিল পরীক্ষায় শতভাগ পাশ করেছে। উপজেলার জামিরা গ্রামে একটি নিরিবীলি পরিবেশে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারী শিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার দীপ্ত শপথ নিয়ে ১৯৯৮ ইং সালে জামিরা মহিলা দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ ইং সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক পাঠদানের অনুমতি লাভ করে ২০০৭ ইং সালে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতি পায়। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে অদ্যাবধি সুযোগ্য শিক্ষকমন্ডলী ও পরিচালকবৃন্দ দ্বারা সুচারুরূপে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে । ২০১৮ইং সালে এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় চরম হতাশায় শিক্ষকমন্ডলী ও এলাকাবাসী। প্রতি বছর পঞ্চম শ্রেণি, অষ্টম শ্রেণি ও দশম শ্রেণীর কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলোতে মেধাবৃত্তি সহ শতভাগ উত্তীর্ণ হয়ে আসছে এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। গতকাল ৩১ মে ২০২০ তারিখের ঘোষিত দাখিল পরীক্ষায় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৭জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে সবাই পাস করেছে। এদের মধ্যে দুইজন A+, ১২ জন A, ২ জন A(-) এবং ১ জন B গ্রেড পেয়েছে । বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হওয়ায় অত্যন্ত জরুরি। তাছাড়া যথাযথ  কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন প্রতিষ্ঠানটিকে এমপিওভুক্ত করার।
নারী শিক্ষায় অবদান রাখা প্রতিষ্ঠানটি সুন্দরভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য সকলের নিকট অনুরোধ করেন এলাকার জনগণ।