Wednesday 22 July 2020

লালমাইয়ের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন : কুমিল্লার সময়




  
প্রদীপ মজুমদার ::
করোনা দুর্যোগের কারণে পুরো দেশ এখন বিপর্যস্ত। প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলছে। ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সকল প্রকার সামাজিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রায় বন্ধ বললেই চলে। তিন/চার মাস ধরে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় সমগ্র দেশের ন্যায় কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদের কাঁধেও চেপে বসেছে লোকসানের বোঝা। এক কথায় করোনাকালে লোকসানের মুখে ডেকোরেটর ব্যবসা। 

জানা গেছে, গত চার মাসে বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি ডেকোরেটর। একই চিত্র সাউন্ড সিস্টেম সরবরাহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেরও। ব্যাবসায়ীরা বলছেন, অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাতো দূরের কথা, নিজেদের টিকে থাকাটাই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

করোনার এই ক্রান্তিকালে গত প্রায় চার মাস নেই কোন বিয়ের অনুষ্ঠান। নেই সাংস্কৃতিক কোনো আয়োজনও। রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশও থামিয়ে দিয়েছে এই করোনা। তাই ভীষণ দুঃসময় যাচ্ছে ডেকোরেটর ও মাইক বা সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর। 

টানা বন্ধে ডেকোরেটর সরঞ্জামগুলো গোডাউনে পড়ে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কাজ না থাকায় মাসে মাসে লোকসান গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

করোনা মহামারিতে বিয়ে, সুন্নতে খাতনা, জন্মদিন, আকিকা, হালখাতা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিসে নানা দিবস পালনসহ সভা-সমাবেশ সম্পুর্ণভাবে বন্ধ থাকায় লালমাই  উপজেলায় ডেকোরেটর ব্যবসায় চরম ধস নেমেছে।  গত প্রায় চার মাস যাবৎ এধরনের কোনো অনুষ্ঠানের ডেকোরেটর ভাড়া না থাকায় উপজেলার প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্যবসায়ীর আয় রোজগার বন্ধ থাকায় কয়েক শ মালিক-শ্রমিক মানবেতর জীবনযাপন করছে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় ইরি ধান কেটে ঘরে ওঠার শেষে গ্রামে গ্রামে জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু হয় বিয়ে, সুন্নতে খাতনা, জন্মদিন, আকিকা, হালখাতা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বছরের ৭ মাস চলে গেলেও এখনো ডেকোরেটর ব্যবসায় কোনো সাড়া নেই। 

উপজেলার বাগমারা বাজারের জসীম ডেকোরেটর মালিক জসীম উদ্দীন জানান, করোনার প্রভাবে সকল প্রকার অনুষ্ঠান প্রায়ই বন্ধ রয়েছে। দু-একটি অনুষ্ঠান হলেও প্রশাসনের অগোচরে ঘরোয়াভাবে হওয়ায় ডেকোরেটরের আর প্রয়োজন হচ্ছে না। ফলে মালিকসহ শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ছে।

লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম  জানান, আমি সবে মাত্র যোগদান করলাম ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সহায়তা চেয়ে কোন আবেদন পাইনি। যদি সরকার থেকে কোনো সহায়তা আসে তা সাথে সাথেই তাদের প্রদান করা হবে।

No comments:

Post a Comment