Thursday 23 January 2020

ভাষা সৈনিক প্রবীন সাংবাদিক আব্দুল জলিলের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী : কুমিল্লার সময়


 
 
ডেক্স নিউজঃ
কুমিল্লার লাকসাম থেকে প্রকাশিত, দক্ষিণ কুমিল্লার প্রাচীন সংবাদপত্র ‘সাপ্তাহিক লাকসাম’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক ভাষা সৈনিক আব্দুল জলিলের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
গত বছরের এ দিনে লাকসাম মমতাময়ী হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ভাষা সৈনিক আব্দুল জলিলের আত্মার মাগফেরাত কামনায় কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নের চন্দনা গ্রামের নিজ বাড়িতে মিলাদ-মাহফিল ও দোয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
গত বছরের ১৩ জানুয়ারি রোববার লাকসাম উত্তর বাজার নিজ বাসায় ভাষা সৈনিক আব্দুল জলিল হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিক তাকে লাকসাম মমতাময়ী হসপিটালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসরা তাকে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হসপিটালে স্থানান্তর করেন। অবস্থার অবনতি দেখে পরদিন সোমবার পুনরায় তাকে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজ হসপিটালে স্থানান্তর করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থারর উন্নতি দেখে তাকে পুনরায় লাকসাম মমতাময়ী হসপিটালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ওইদিনই দুই দফা জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
ভাষা সৈনিক আব্দুল জলিলের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দেশ-বিদেশের সকল শুভাকাঙ্খীদের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া চেয়েছেন তার বড় ছেলে নুরুদ্দীন জালাল আজাদ।
উল্লেখ্য, ১৯৩৬ সালের পহেলা জানুয়ারি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নের চন্দনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই গুণী সাহিত্যিক ভাষা সৈনিক আবদুল জলিল। ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেছা কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। মাতৃভাষার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার তাগিদে যোগদান করেছিলেন ভাষা আন্দোলনে। ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও তার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। তিনি দক্ষিণ কুমিল্লার প্রাচীন সংবাদপত্র ‘সাপ্তাহিক লাকসাম’ এর প্রকাশক ও সম্পাদক।
বিভিন্ন সময় কুমিল্লা জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ট্র্যাব), বাসস, বাংলাদেশ বেতার কুমিল্লা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন ভাষা সৈনিক আবদুল জলিলকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন। তার লেখা নাটক ‘খুনে লাল বাংলা’ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বৃহত্তর লাকসাম ও কুমিল্লা সংক্ষিপ্ত অধ্যায়সহ জনপদ কথামালা, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার সাংবাদিকতার উদ্ভব ও বিকাশের ইতিহাস, ওগো বঙ্গবন্ধু, সাগর তীরে কেওড়াবনে, পীর মুর্শিদের বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। সত্তরের দশকে তিনি উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা, খেলাঘর ও সুজন মজলিশের আঞ্চলিক সংগঠক হিসেব ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৫৮ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘লাকসাম লেখক সংঘ’র মাধ্যমে তিনি সৃজনশীল লেখক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক তৈরির প্রচেষ্টায় সফল হয়েছেন।

No comments:

Post a Comment