ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপন করলেন কুমিল্লার লালমাই উপজেলার হিন্দু ব্যবসায়ী রিদম ফার্নিচার এর স্বত্বাধিকারী রিপন বৈষ্ণব। তিনি ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুসলমানদের বাড়ী বাড়ী ঈদ উপহার খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ তৈরি করলেন রিপন বৈষ্ণব। পিতা অমর কৃষ্ণ বৈষ্ণব এক সময় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। পিতার হাত ধরেই ব্যবসায় জড়ান এই তরুণ উদীয়মান ব্যবসায়ী। উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের জগতপুরে তার আবাসনের পাশেই গড়ে তুলেছেন বিশাল রিদম ফার্নিচার ফ্যাক্টরি। রয়েছে এসএস ষ্টীল, ক্যাবল লাইন, ইন্টারনেট ব্যবসা। গত ২৪ মার্চের পর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রারম্ভে এখন পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায়দের দিয়ে যাচ্ছেন খাদ্য সহায়তা। তার এই মহৎ উদ্যোগ সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
গত ২৪ মে রবিবার পর্যন্ত এই ব্যবসায়ী নিজ এলাকার প্রায় সহস্রাধিক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা করেছেন। এর মাঝে ৪শ মুসলিম পরিবারে ঈদ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। অনেকটা গোপনেই চলছে তার এই খাদ্য ও ঈদ সহায়তা কার্যক্রম।
যেকোন সমস্যাগ্রস্ত লোক রিপনকে তার সমস্যার কথা বললে সহায়তা করেন তিনি। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনেও রয়েছে তার সক্রিয় উপস্থিতি।
এছাড়া তার আর্থিক সহায়তায় লালমাই উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের একটি এতিমখানা ও হাফেজী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের পুরো রমজানে ইফতার সরবরাহ করা হয়েছে।
রিদন ফার্নিচারের মালিক রিপন বৈষ্ণ বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রথম থেকেই সমাজের অসহায় কর্মহীন মানুষের পাশে থেকে তাদের সাধ্য অনুযায়ী সহায়তা দিয়েছি । বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে ঈদ উপহার দিতে পেরে আমি ও আমার পরিবারের ভালো লাগছে। তিনি আরও বলেন সৃষ্টি কর্তার নিকট প্রার্থনা করবেন আগামীদিনেও যেন মানব কল্যাণে কাজ করতে পারি।
বাংলাদেশ বৈচিত্র্য এবং সম্প্রীতির দেশ। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে বিভিন্ন ধর্মের লোকের বসবাস। তাদের মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগই মুসলিম, বাকি ১০ ভাগের মধ্যে রয়েছে হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মের লোক। জাতি, ধর্ম ও ভাষার পার্থক্য থাকলেও কোন মতভেদ নেই । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নমুনা বিশ্বের আর কোন দেশে খোঁজে পাওয়া বিরল। বিশ্বের অনেক দেশের জন্য ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উদাহরণ হতে পারে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ।
লালমাই প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইউনির্ভাসেল কামাল বলেন রিপন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সকলের উচিত যার যার অবস্থান অনুযায়ী মানুষের কল্যাণে কাজ করা। আমি দোয়া করি সে যেন আরও বেশি করে মানব সেবায় নিবেদিত হতে পারে।
No comments:
Post a Comment